২৬ হাজার চাকরী বাতিলের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট

Share

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ নয়া দিল্লিঃ গত ২২ শে এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্ট ২৬ হাজার স্কুল শিক্ষকের চাকরী বাতিলের যে নির্দেশ দিয়েছিল, এদিন সুপ্রিম কোর্ট তার উপরে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করলো। অর্থাৎ আপাতত প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরী বহাল থাকছে৷ তবে বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়ে জানানো হয়েছে, যাদের চাকরী বাতিল হয়েছিল সেই শিক্ষকদের মুচলেকা দিয়ে জানাতে হবে যে ভবিষ্যতে অযোগ্য বলে প্রমাণিত হলে হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক ফেরত দিতে হবে।

আগামী ১৬ ই জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি৷ ওই দিনই এই মামলার চূড়ান্ত রায়দান করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিতে গিয়ে জানিয়েছে, এসএসসি যদি যোগ্য অযোগ্যদের বিভাজন করতে পারে, তাহলে সমগ্র প্যানেল বাতিল ন্যায্য নয়। পাশাপাশি, প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরী বাতিল হলে তার অভিঘাত অনস্বীকার্য।


কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত সরকারি পদাধিকারিকদের প্রয়োজনে হেফাজতে নিতে হবে সিবিআই-কে। শীর্ষ আদালত এ দিন জানিয়েছে, সিবিআই এসএসসি সমস্ত তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। তবে অতিরিক্ত শূন্যপদ নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশিত তদন্তে কাউকে গ্রেফতার করা যাবেনা। তিন মাসের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে।


নির্দেশ দেওয়ার আগে এ দিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় মন্তব্য করেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি যাই হোক না কেন , এখানে আমরা সবাই বিচার ব্যবস্থার অঙ্গ। ফলে আমাদের সেই শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। শান্তিপূর্ণ ভাবে শুনানি সম্ভব হচ্ছে না।’ কলকাতা হাইকোর্ট প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেওয়ার পরই সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল এসএসসি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং রাজ্য সরকার৷


এ দিন শুনানি চলাকালীন শীর্ষ আদালতে এসএসসি-র আইনজীবী দাবি করেন, ২০১৬ সালের ওই প্যানেলের মধ্যে ১৯ হাজার নিয়োগই বৈধ ছিল৷ তার স্বপক্ষে যাবতীয় তথ্য এসএসসির হাতে রয়েছে বলেও দাবি করেছেন এসএসসি-র আইনজীবী। ফলে কয়েক হাজার অবৈধ নিয়োগের জন্য কেন যোগ্য প্রার্থীদের চাকরি বাতিল হবে, শীর্ষ আদালতে সেই প্রশ্ন তোলে এসএসসি৷ একই সঙ্গে এসএসসি-র পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, অযোগ্য চাকরি প্রাপকদের হয়ে কোনও সওয়াল এসএসসি আদালতে করবে না৷

এসএসসি দাবি করে, নাইসা-র থেকে পাওয়া তথ্যের উপরে ভিত্তি করেই অযোগ্য চাকরি প্রাপকদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এ দিনের শুনানির আগে শীর্ষ আদালত এসএসসি-র কাছে জানতে চেয়েছিল, যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরি প্রাপকদের পৃথকীকরণ সম্ভব কি না৷ এসএসসি-র পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়েছিল, তাদেরকাছে সেই তথ্য রয়েছে৷ সেই মতো এ দিন শীর্ষ আদালতে যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা হলফনামা আকারে জমা দেয় এসএসসি।

এ দিন শুনানি পর্বে বার বারই সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকার এবং এসএসসি-কে। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ক্ষোভের সঙ্গে মন্তব্য করে, ‘এমনিতেই সরকারি চাকরি খুব কম৷ তার উপরে সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও দুর্নীতি হলে মানুষের ভরসা উঠে যাবে৷ প্রচুর গরিব মানুষ সরকারি চাকরির দিকে তাকিয়ে থাকেন।’

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
September 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930