অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে আবারো একটি শ্লীলতাহানির অভিযোগের অনুসন্ধান নবান্নে রিপোর্ট জমা পড়েছে। সূত্রের খবর, প্রায় এক বছর আগে এক জন ওডিশি নৃত্যশিল্পী রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে লালবাজারে জানান। সম্প্রতি কলকাতা পুলিশ ওই অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করে একটি রিপোর্ট নবান্নে জমা দিয়েছে। সূত্রের খবর, রাজভবনের অন্দরে শ্লীলতাহানির অভিযোগের অনেক আগেই এই অভিযোগটি জমা পড়েছিল।
ওই মহিলার কথায়, “গত বছর ওই নৃত্যশিল্পীকে নয়াদিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশনা করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আর সেখানের একটি বিলাসবহুল হোটেলে তার জন্য ঘর বুক করা হয়েছিল। রাজ্যপালের এক আত্মীয় ওই বুকিং করেছিলেন বলে দাবী করা হয়েছে। আর ৫ ই জুন ও ৬ ই জুন ওই হোটেলে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছিল।” এরপর ওই নৃত্যশিল্পী লালবাজারে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান।
কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী, পুলিশ সাংবিধানিক পদে থাকা কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনোরকম তদন্ত করতে পারে না। তাই লালবাজার অভিযোগকারিণীর অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু করে। আর লালবাজার সেই অনুসন্ধান সংক্রান্ত রিপোর্টই নবান্নের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের কাছে জমা দিয়েছে। এদিকে, গত ২ রা মে রাজভবনের এক জন অস্থায়ী মহিলা কর্মী সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রকাশ্যে আনেন।
এই ঘটনায় ওই মহিলা হেয়ার স্ট্রিট থানায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান। আর পুলিশ অভিযোগ পেয়ে অনুসন্ধানের প্রাথমিক রিপোর্ট কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েলের কাছে জমা দেন। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগকে ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজ্য-রাজনীতি উত্তাল। আর এই অভিযোগকে হাতিয়ার করে রাজ্যের শাসকদল রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরব হন। যদিও সিভি আনন্দ বোস সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ‘‘অশুভ উদ্দেশ্যেই এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে।’’
এমনকি, রাজভবনের তরফ থেকে বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছিল, ‘‘সংবিধানের ৩৬১ (২) এবং (৩) ধারা অনুযায়ী, কোনো রাজ্যপাল নিজের পদে থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে দেশের কোনো আদালতে ফৌজদারি তদন্তপ্রক্রিয়া চলতে পারে না।’’ পাশাপাশি এই ব্যাপারে রাজভবনের সাথে যুক্ত কোনো ব্যক্তি যেন কোথাও মুখ না খোলেন, তাও জানিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল।