সাতসকালেই কেঁপে উঠল আসাম সহ গোটা উত্তরবঙ্গ
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ আসামঃ সকাল সকালই আতঙ্কে জেগে উঠল আসাম ও উত্তরবঙ্গ। তখন ঘড়িতে ঠিক ৭ টা ৫৪ মিনিট এমন সময় অসম জুড়ে তীব্র কম্পন অনুভূত হলো। এরপরই ফের ৪ মিনিটের ব্যবধানে ৭ টা ৫৮ মিনিটে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা যেমন দার্জিলিং,জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার কেঁপে উঠেছিল। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৪।
ভূমিকম্পের উত্পত্তিস্থল অসমের শোণিতপুর এলাকায় মাটি থেকে ২১.৪ কিলোমিটার নীচে ছিল। ভূমিকম্পকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছিল। আসাম ও উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি মালদা এবং মুর্শিদাবাদেও মৃদু কম্পন অনুভূত হয়।
জানা গেছে, বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি বাড়ি ও রাস্তা-ঘাটে ফাটল ধরেছে। গুয়াহাটি শহরে ভীষণ ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। উঁচু বহুতলগুলি থেকে চাঙড় খসে পড়ার পাশাপাশি কোথাও জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়েছে তো কোথাও দু’টো বহুতল একে অপরের গায়ে হেলে পড়েছে। উদালগুড়ি জেলার ভৈরবকুন্ড পাহাড়ের একটা অংশ পুরোপুরি ধসে গিয়েছে। গুয়াহাটির শহরতলি চন্দ্রপুরের বাসিন্দা ৭০ বছরের এক প্রৌঢ় ভূমিকম্পের ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রচণ্ড গরমে উত্তর ভারত জুড়ে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। এমনকি উত্তর-পূর্বে বৃষ্টিপাত হওয়ায় চ্যুতিরেখা বরাবর উষ্ণতার ব্যাপক তারতম্য হয়েছে। এর ফলেই ভূমিকম্প হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের ধারনা, এই ভূমিকম্প নিছক কম্পন নয়। গত প্রায় দু’বছর ধরে এই এলাকায় ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে যা বড়ো কোনো বিপর্যয়ের ইঙ্গিত বহন করছে। যার ফলে আজকের এই ভূমিকম্প বড়ো মাপের ভূমিকম্পের পূর্বাভাসও হতে পারে। তাই আগামী দিনে অসম, সিকিম, মেঘালয়, অরুণাচল এবং উত্তরবঙ্গের মানুষের সতর্ক থাকার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে।
এদিনের জোড়া ভূমিকম্প নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, “ভূমিকম্পের বিষয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়ালের সঙ্গে কথা বলেছি। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছি। অসমবাসীর সুরক্ষা কামনা করছি”।