Reading Mode

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ শতাব্দী প্রাচীন স্কুল। ২০১৪ সালে এই হাইস্কুলের পড়ুয়া উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম হয়েছিলেন। মাধ্যমিকে একাধিকবার মেধাতালিকায় নাম উঠলেও প্রথম কখনও হয়নি এই স্কুল। প্রথমবার মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছে এই স্কুলের ছাত্র। খুশির হাওয়া উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের করোনেশন হাইস্কুলে। সেই খুশির হাওয়ার মধ্যেও যেন কিছুটা বিষাদের ছায়া স্কুলে। কারণ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যে ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে, সেই তালিকায় এই স্কুলের একমাত্র বায়োলজির শিক্ষিকার নাম রয়েছে। বায়োলজি শিক্ষিকার চাকরি বাতিল হয়ে যাওয়ায় পড়াশোনায় ক্ষতির আশঙ্কাও করছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।

রায়গঞ্জের অন্যতম নামী স্কুল করোনেশন হাইস্কুল। পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মোট পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ১৮০০। এই স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন ৩৭ জন। অস্থায়ী শিক্ষক আরও ৬ জন। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকে ভাল ফল করে। বছর এগারো আগে এই স্কুলের পড়ুয়া উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম হয়েছিলেন। প্রধান শিক্ষক কালীচরণ সাহা বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম একবার হলেও মাধ্যমিকে কখনও আমাদের স্কুল প্রথম হতে পারেনি। তবে মেধাতালিকায় নাম এসেছে। এবার প্রথম হওয়া গর্বের, আনন্দের বিষয়। এই ধরনের দিন আগামিদিনেও দেখতে চাই।”

তবে এই খুশির দিনেও স্কুলের বায়োলজির শিক্ষিকার চাকরি বাতিল নিয়ে কিছুটা চিন্তায় প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, “এই খুশির দিনেও একটা বেদনার জায়গা রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আমাদের বায়োলজির শিক্ষিকার চাকরি গিয়েছে। বায়োলজির স্থায়ী শিক্ষিক ওই একজনই। এটা বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি। তবে উনি যোগ্যদের তালিকায় রয়েছেন। এটাই সাময়িক স্বস্তি। কিন্তু স্থায়ী স্বস্তি নয়।” সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুল করতে পারবেন ওই শিক্ষিকা। তিনি চলে গেলে পড়াশোনায় প্রভাব পড়বে বলে মেনে নিলেন প্রধান শিক্ষক। তবে স্কুলে বায়োলজি শিক্ষকের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে বলে জানালেন প্রধান শিক্ষক।

করোনেশন হাইস্কুল শুধু এবার প্রথম স্থান অধিকার করেনি, এই স্কুলের আরও এক ছাত্র এবার দশম স্থান অধিকার করেছে। ৬৮৬ নম্বর পেয়ে দশম হয়েছে এই স্কুলের ছাত্র কৌস্তভ সরকার। ভবিষ্যতে মেডিক্যাল নিয়ে পড়াশোনা করতে চায় সে। উচ্চমাধ্যমিক নিজের স্কুলেই পড়বে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বায়োলজি তার প্রিয় বিষয়। স্কুলের বায়োলজির শিক্ষিকার চাকরি চলে যাওয়া নিয়ে তার বক্তব্য, “খুবই খারাপ লাগছে। আমাদের খুব ভালবাসেন। যত্ন নিয়ে পড়ান। ওই ম্যাম যেভাবে পড়াতেন, আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। উনি বায়োলজির স্থায়ী শিক্ষিকা ছিলেন। আর একজন পার্ট টাইমার রয়েছেন।”