এবার তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ হারালেন অনুব্রত মন্ডল

Share

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বীরভূমঃ ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগেই তৃণমূল জেলায় জেলায় সাংগঠনিক স্তরে বড়ো পরিবর্তন এনেছে। যেমন উত্তর কলকাতায় সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সভাপতির পদ থেকে অপসারিত হয়ে সেখানে ন’জনের কোর কমিটি তৈরী হয়েছে। এদিকে আগেই বীরভূমে এই ‘কোর কমিটির’ রসায়ন আগেই দেখা গিয়েছিল। এবার তৃণমূল বীরভূম থেকে দলের সভাপতি পদটাই তুলে দিল। এবার থেকে বীরভূমে কোর কমিটির হাতেই দলের দায়িত্ব থাকবে। অর্থাৎ এখন থেকে আর অনুব্রত মণ্ডলকে বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলে ডাকা যাবে না। তিনি শুধু কোর কমিটির সদস্য।

বীরভূমের দুই সাংসদকে কোর বৈঠকে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, বীরভূমের কোর কমিটির সাত জন সদস্যের মধ্যে কাজল শেখ, সুদীপ্ত ঘোষ, অনুব্রত মণ্ডল, অভিজিৎ সিংহ, চন্দ্রনাথ সিনহা, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিকাশ রায় চৌধুরী রয়েছেন। কিন্তু, কমিটির বৈঠক নিয়ে দলের মধ্যে চাপানউতোর তৈরী হয়েছে। অনুব্রত মণ্ডলের উপস্থিতি-অনুপস্থিতি নিয়েও চাপানউতোর কম হয়নি। প্রকাশ্যেই কাজল শেখের মতো নেতাকে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গিয়েছে। এই অবস্থায় নির্বাচনের আগে জেলা সভাপতির পদ তুলে ফেলা আলাদা করে যে তাৎপর্যপূর্ণ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

গরুপাচার মামলায় ২০২২ সালে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরেই বীরভূমে কোর কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা। কমিটিতে রেখেছিলেন কাজলকে, যাঁর সঙ্গে কেষ্টর ‘মধুর’ সম্পর্ক সর্বজনবিদিত। পরে যখন তিনি জেল থেকে ছাড়া পান, আলাদা করে তাঁকে ওই পদে বসানোরও কোনও বিষয় ছিল না। জেলা সভাপতি হওয়ার সুবাদে কোর কমিটিতেও তাঁর অন্তর্ভুক্তি ঘটে। তবে দলনেত্রী মমতা বার বার কড়া নির্দেশ দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোর কমিটির সঙ্গে সমন্বয় রেখেই কেষ্টকে দল চালাতে হবে।


কিন্তু তার পরেও অনুব্রত যে ভাবে কোর কমিটিকে এড়িয়ে কাজ করছিলেন, তাতে জেলার নেতাদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ে। দলীয় সূত্রে দাবি, সেই সব খবরাখবর শীর্ষ নেতৃত্বের কানে গিয়েছিল। এ বার জেলা সভাপতি পদটাই তুলে দিয়ে কড়া বার্তা দিল দল। দলের একটি অংশের দাবি, অনুব্রত জেলে থাকাকালীন লোকসভা ভোটে বীরভূমে ভালই সাফল্য পেয়েছে দল। কোর কমিটিই সংগঠন পরিচালনা করে দলকে জেলার দু’টি আসনেই জিতিয়েছে।

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে যে দুবরাজপুরে বিজেপি জিতেছিল, সেখানেও দল লিড পেয়েছে। ফলে কেষ্ট ছাড়াও যে জেলায় দলের পক্ষে জেতা সম্ভব, তা দল জানে। যদিও কেষ্ট-ঘনিষ্ঠদের দাবি, কেষ্টর সাজানো সংগঠনের উপরে দাঁড়িয়েই লোকসভায় ভাল ফল করেছিল দল। সভাপতি পদে বদল হাওড়া সদরে। কল্যাণ ঘোষকে সরিয়ে গৌতম চৌধুরীকে সভাপতি করা হয়েছে। চেয়ারম্যান হিসেবে লগনদেও সিংহয়ের পরিবর্তে রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী অরূপ রায়কে করা হয়েছে।


মুর্শিদাবাদের বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান পরিবর্তন হয়েছে। রবিউল আলম চৌধুরীর পরিবর্তে নিয়ামত শেখ নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন। বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর দুই সাংগঠনিক জেলাতেই বদলে ফেলা হল সভাপতি। বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পদ থেকে সরানো হল বাঁকুড়ার সাংসদ অরুপ চক্রবর্তীকে।দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারাশঙ্কর রায়কে।

তারাশঙ্কর এত দিন বাঁকুড়ার তালড্যাংড়া ব্লকের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘দল দায়িত্ব দিয়েছে। আগামী দিনে আমি সকলকে নিয়ে চলব। বিধানসভা নির্বাচনে সব ক’টি আসনে জয়লাভই আমাদের লক্ষ্য।’’ বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলাতেও জেলা সভাপতি পদে রদবদল করা হল। সভাপতি পদ থেকে বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হল সুব্রত দত্তকে।


Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
June 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30