অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ গতকাল নিউটাউনে এসটিএফের এনকাউন্টারে জয়পাল ভুল্লার ও যশপ্রীত সিং খাড়ার নামে পাঞ্জাবের দু’জন গ্যাংস্টার নিহত হয়।
পুলিশ সূত্র অনুযায়ী জানা গেছে, ২৩ শে মে থেকে জয়পালদএবং যশপ্রীত নিউটাউনের সাপুরজি আবাসনে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল। ফ্ল্যাটের মালিকরা অন্য জায়গায় থাকেন। এজেন্সির মাধ্যমে এই ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়া হওয়ায় খুব সহজেই এই ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়ে যায়। এজেন্সিকে এক মাসের ২০ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে ১১ মাসের চুক্তিতে ১০ হাজার টাকা করে ভাড়ার বিনিময়ে ফ্ল্যাট নেয়। বাংলায় নম্বর প্লেট লেখা একটি গাড়িও ভাড়া নেয়।
পুলিশ সূত্রের খবরের ভিত্তিতে এও জানা যায়, তারা খুব বেশী বাইরেও বের হতো না। এছাড়া ফ্ল্যাটের জানলাও বেশীরভাগ সময় বন্ধ থাকতো। পুলিশ তল্লাশী চালিয়ে জানতে পারে সেই ফ্ল্যাটের আবাসনের আলমারীতে পাওয়া পোশাকের প্লাস্টিকের প্যাকেটে উর্দু ভাষায় পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের কোনো দোকানের নাম-ঠিকানা লেখা রয়েছে। তাছাড়া দুষ্কৃতীদের কাছ থেকে যে বিপুল পরিমাণে অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া গেছে তার মধ্যে ‘মেড ইন পাকিস্তান’ লেখা রিভলবার ছিল। পাক অস্ত্রপাচারকারীদের কাছ থেকে দুষ্কৃতীদের হাতে এই রিভলবার এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
- Sponsored -
- Sponsored -
এর থেকেই এই ঘটনার সাথে পাকিস্তানের যোগাযোগের সম্ভাবনা জোড়ালো হচ্ছে। অবশ্য গোয়েন্দারা মনে করছেন, এই প্লাস্টিক অন্য ভাবেও এসে পৌঁছাতে পারে। যদিও মৃতদের পাকিস্তানে যাতায়াত ছিল কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়।
DGP Punjab Police
Crime never Pays & the long arm of the Law catches, sooner than later! Most Wanted drug smuggler of Punjab, Jaipal Bhullar & Jassi Kharar shot dead in a flawlessly executed operation by STF West Bengal in New Town #Kolkata on specific inputs of Punjab Police.
DGP Punjab Police
Both were wanted for multiple crimes, including the cold blooded murder of our 2 ASIs in Ludhiana on 15th May, 2021 & were taken in less than a month. Proud of the close cooperation between state & central police organizations!
পাঞ্জাব পুলিশের ডিজিপি টুইট করে বলেছেন, “১৫ ই মে লুধিয়ানায় পাঞ্জাব পুলিশের দুই এএসআইকে হত্যার সঙ্গে জয়পাল ভুল্লার ও যশপ্রীত সিং খাড়ার নাম জড়িত ছিল। ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে পুলিশ অফিসারদের খুন করা হয়েছিল। ওই অফিসাররা আন্তর্জাতিক ড্রাগ মাফিয়াদের সঙ্গে এই গ্যাংস্টার দলের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছিলেন বলে হত্যা করা হয়”।
এদিকে জয়পালের বাবা পাঞ্জাবের পুলিশের প্রাক্তন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর ছিলেন। জয়পাল নিজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রের পাশাপাশি পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় সরকারী স্পোর্টস ট্রেনিং সেন্টার স্পিড ফান্ড অ্যাকাডেমীর মেধাবী ছাত্র ছিল। ওই অ্যাকাডেমীতেই জয়পালের সাথে এক খেলোয়াড় হ্যাপির পরিচয় হয়। অল্প সময়ের জন্য হ্যাপি অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িত ছিল। জয়পালের পাতিয়ালায় একটি ব্যাঙ্ক ডাকাতিতেও নাম জড়ায়। আবার তার নামে একটি ব্যাঙ্ক থেকে ৩০ কেজি সোনা লুঠের অভিযোগ ছিল। প্রথম দিকে জয়পাল ডাকাতি এবং ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত থাকলেও পরে খুন, মাদক পাচার সহ আন্তর্জাতিক অস্ত্র কারবারীদের সাথে যুক্ত হয়ে যায়।
২০১৬ সালে জয়পাল ভুল্লারের বন্ধু শের খুব্বা ভাটিন্দায় খুন হয়। এরপর সে এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নিতে হিমাচল প্রদেশে গিয়ে একজনকে খুন করে। বেশীরভাগ মামলাতেই প্রমাণের অভাবে জয়পাল এবং তার সাথীরা ছাড়া পেয়ে গিয়েছিল।
পাঞ্জাবের লুধিয়ানার একজন পুলিশ আধিকারিক জানান, ”নিহত গ্যাংস্টাররা আফিম, হিরোইন ইত্যাদি মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিল। এই ক্ষেত্রে আমরা পাকিস্তান বা জম্মু-কাশ্মীরের সীমান্ত এলাকা দিয়ে মাদকচক্র চালানোর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি”।