ব্যুরো নিউজঃ আন্দামানঃ ভারত মহাসাগরের বুকে অবস্থিত ভারতের বৃহত্তম অতি মনোরম একটি দ্বীপপুঞ্জ যা আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ নামে পরিচিত। এই আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বর্তমানে মোট ৫৭২ টি দ্বীপ আছে।
দক্ষিণ আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পূর্ব দ্বীপের বিভিন্ন জঙ্গলে যে আদিবাসী সম্প্রদায় বসবাস করে তারা জারোয়া নামে পরিচিত। জারোয়া জাতিগোষ্ঠী বিলুপ্ত জাঙ্গিল উপজাতি থেকেই শতাব্দী বা সহস্রাব্দ যুগ আগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল।
আন্দামানের ভাষা ‘Aka-bea’ অনুসারে জারোয়া শব্দের অর্থ আগন্তুক। কিন্তু জারোয়া নিজেদের ‘Ang’/’Aong’ বলে অভিহিত করে থাকে যার অর্থ জনতা। ভারতের সাংবিধানিক পরিভাষায় জারোয়ারা তপশিলী উপজাতি শ্রেণীর অন্তর্গত। জারোয়ারা হল একটি ক্ষুদ্র জংলী যাযাবর উপজাতি। জারোয়াদের জীবনযাত্রা ও সমাজব্যবস্থা আদিম প্রকৃতির। জারোয়ারা অর্ধনগ্ন অবস্থায় থাকে। জারোয়ারা যে কুঁড়েঘরে বসবাস করে তা ‘Chadda’ নামে পরিচিত।
বর্তমানে জারোয়াদের আনুমানিক সংখ্যা ৩০০-৪০০ জন। এই জারোয়ারা জারোয়া ভাষায় কথা বলে। জারোয়া ভাষার কোনো হরফ নেই।
জারোয়ারা মধু, ফলমূল, জঙ্গলের জীবজন্তু ও সাগরের মাছই খাদ্য রূপে গ্রহণ করে। শিকার করার প্রধান অস্ত্র তীর-ধনুক।
৭০ এর দশকে ভারত সরকার জারোয়া এলাকার বুক চিরে সড়ক পথ নির্মাণ করে। কিন্তু জারোয়াদের সুরক্ষার জন্য জারোয়াদের এলাকায় বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ।
এর কারণ বহিরাগতদের প্রবেশের জন্য জারোয়াদের জীবনযাত্রার ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এছাড়া বহিরাগতদের প্রবেশের ফলে জারোয়াদের মধ্যে বিভিন্ন রোগ প্রবেশ করতে পারে।
এর পাশাপাশি জারোয়ারা বাইরের মানুষের অনুপ্রবেশ একদম পছন্দ করে না। অনেক সময় জারোয়ারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারীদের বিষমাখা তীর ছুঁড়ে হত্যা করে।
কিন্তু বর্তমানে আন্দামান ট্রাঙ্ক রোডের মাধ্যমে জারোয়াদের কাছাকাছি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর সাথে সাথে যে সমস্ত জারোয়ারা কিছুটা উন্নতমানের হয়েছে সেই সমস্ত জারোয়াদের ছেলে-মেয়েকে শিক্ষাদানের জন্য নিকটবর্তী বিদ্যালয়তেও ভর্তি করা হয়েছে।