হাসপাতালে ভর্তির অনুমতি মিলল না করোনা রোগীর

Share

স্নেহাশীষ মুখার্জিঃ নদীয়াঃ হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ড থাকলেও হাসপাতালে ভর্তির অনুমতি মিলল না করোনা পজিটিভ রোগীর। এটি নদীয়ার কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের ঘটনা।

কৃষ্ণনগর শক্তিনগর হাসপাতালের গেটের উল্টোদিকের বাড়িতে থাকা করোনা পজিটিভ রোগীকে ভর্তি নিল না শক্তিনগর হাসপাতাল। মৃত বিপ্লব সাহা পেশায় ওষুধের কারবারি ছিলেন। বিপ্লববাবুর শক্তিনগর হাসপাতালের সামনে ঔষুধের দোকান ছিল। শ্রী বিনয় মেডিকেল নামে যা পরিচিত। এখানেই শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের কিছু বিশিষ্ট চিকিৎসক বসতেন। কিন্তু বিপ্লববাবু যখন করোনা আক্রান্ত হন তখন তার ভর্তির অনুমতি মিলল না সেই কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালেই।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন ধরেই পেশায় মেডিসিন বিক্রেতা বিপ্লববাবুর জ্বর হচ্ছিল। বিপ্লববাবু জ্বরের মধ্যেও হাসপাতাল থেকে দ্বিতীয় ভ্যাকসিন নিয়ে এসেছিলেন। এরপর গতকাল সকাল থেকেই তার শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা শুরু হয়।

https://www.youtube.com/watch?v=tiWf6c8ocE4


পরিবারের অভিযোগ, “শক্তিনগর হাসপাতালে যোগাযোগ করলে হাসপাতাল থেকে বলা হয় যে তারা করোনা পজিটিভ রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি নেবেন না। তারপর তাকে সেখান থেকে পৌর হাসপাতালে যাবার পরামর্শ দেওয়া হয়। এরপর বিপ্লববাবু সেখানে গেলে দেখতে পান কৃষ্ণনগর পৌর হাসপাতালে তালা দেওয়া। পরবর্তীতে বিপ্লববাবুর জামাই ও তার ভাই বিপ্লববাবুকে ভর্তি করানোর জন্য কলকাতার অনেক জায়গায় ফোন করেন। তবে তারা কোথাও বেড পাননি। শেষে হেল্প লাইনে ফোন করার পর হেল্প লাইন থেকে তাদের আশ্বস্ত করা হয় যে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তারা রোগীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করবেন। কিন্তু তারা আর যোগাযোগ করেননি। এরপর রাত আনুমানিক দুটোর সময় বিপ্লববাবু প্রায় বিনা চিকিৎসায় মারা যান।

মৃত করোনা আক্রান্ত বিপ্লব বাবুর বন্ধু মহিম গাঙ্গুলী বলেন, “যখন করোনায় বিপ্লববাবু আক্রান্ত হলেন তখন তিনি চিকিৎসা পেলেন না। অথচ কৃষ্ণনগর শক্তিনগর হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। তাহলে একজন ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত পজিটিভ রোগীকে কেন ভর্তি করা যাবে না? আর যখন করোনায় নেগেটিভ হবে তখন তাদের কি ভর্তি নেবে শক্তিনগর হাসপাতাল? পজিটিভ হলে শক্তিনগরে করোনার কি কোনো চিকিৎসা হবে না? মহিমবাবুর প্রশ্ন কৃষ্ণনগর শক্তিনগর হাসপাতালের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে”।


অতঃপর মহিমবাবু প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি অভিযোগ করেন, “গত কাল রাত ২ টোর সময় বিপ্লববাবু মারা গেছেন। তবে এখনো প্রশাসন তার বডি নিয়ে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা করেনি”।

কৃষ্ণনগরের মেন রাস্তার ওপর জেলা হাসপাতাল। আউটডোর রয়েছে, রয়েছে জরুরী পরিষেবা বিভাগ। প্রতিনিয়ত রোগীর আনাগোনা, রোগীর পরিবারের লোকজন যাতায়াত করছে। এছাড়া খাতায়-কলমে সরকারী বিজ্ঞাপনে বলা হচ্ছে, করোনা বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর অপরদিকে ১ জন করোনা রোগী মারা গেছে। সে ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় পড়ে আছে তবুও তার সৎকার করা হচ্ছে না। এ যেন প্রশাসনিক ঘেরাটোপেই প্রশাসন অবহেলিত।

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
October 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031