নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বাঁকুড়াঃ বাঁকুড়ার এক নম্বর ব্লকের কেঞ্জাকুড়া হাই অ্যাটাচড্ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাসের পর মাস প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে না এসে ইচ্ছামতো হাজিরা খাতায় সই করে দেন। আর এই অভিযোগে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সহ শিক্ষককে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে তালাবন্দি করে রাখেন অভিভাবকেরা।
অভিভাবকদের অভিযোগ, ‘‘এই বিদ্যালয়ে এক সময় লেখাপড়ার মান ছিল যথেষ্ট ভালো ছিল। পড়ুয়ার সংখ্যার বিচারেও এলাকার অন্যতম বড়ো বিদ্যালয় হিসাবে পরিচিতি ছিল। বর্তমানে পাঁচটি ক্লাস মিলিয়ে ১৮৩ জন পড়ুয়া রয়েছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক বিপ্লব মণ্ডল নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না। কিন্তু মাসের পর মাস বিদ্যালয়ে না এসে দিব্যি হাজিরা খাতায় সই করে যান। বেতনও নেন।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
বিদ্যালয়ের মূল্যায়ন পরীক্ষা সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কাজও ব্যাহত হচ্ছে। কয়েক দিন পর বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা। তবে তিনি না আসায় ওই পরীক্ষা আদৌ হবে কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। এছাড়া মিড ডে মিলেরও মান নেমেছে। মাঝে মধ্যেই মিড ডে মিল বন্ধ থাকছে। প্রায় দুই মাস আগে মিড ডে মিলের জন্য বরাদ্দ চালে ব্যাপক বেনিয়ম করার পর থেকে আর একদিনও বিদ্যালয়েই আসেননি।’’
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
এই সব ঘটনার জন্য এদিন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং সহ শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসতেই অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। ফলে দীর্ঘক্ষণ বেশ কিছু পড়ুয়াকেও তালাবন্দি অবস্থায় কাটাতে হয়। এরপর বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ এবং শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকেরা খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিভাবকদের বুঝিয়ে তালা খোলার ব্যবস্থা করেন।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
বিদ্যালয়ের সহশিক্ষক সুদীপ মহাপাত্র অভিভাবকদের অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়ে জানান, ‘‘দিনের পর দিন প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় না এলেও হাজিরা খাতায় কী লেখেন, তা তিনিই জানেন। আমরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে এলেও প্রধান শিক্ষক না আসায় বহু কাজ আটকে যায়। পঠন-পাঠনও ব্যাহত হয়। শেষ ২৯ শে সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ে এসেছিলেন।’’
জেলার সদর পশ্চিম চক্রের স্কুলপরিদর্শক ইরা সুবুদ্ধি বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগের কথা অভিভাবকদের মুখে শুনলাম। সমস্ত অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিদ্যালয়গুলিতে নজরদারীর কোনো অভাব নেই। কিন্তু এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যে বিদ্যালয়ে আসছেন না, তা আমরা আগে জানতাম না।’’
এদিকে প্রধান শিক্ষক সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেন বলেছেন, ‘‘অক্টোবর মাসে টানা বেশ কিছু দিন ছুটি নিয়েছিলেন। নভেম্বরে বিএলও হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ায় বিদ্যালয়ে আসা সম্ভব হয়নি। তবে মাসের পর মাস বিদ্যালয়ে না যাওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আর মিড ডে মিলে বেনিয়মের অভিযোগও সম্পূর্ণ পরিকল্পিত চক্রান্ত।’’