চয়ন রায়ঃ কলকাতাঃ একটানা প্রায় ১০ ঘণ্টা যুদ্ধ চালিয়ে অবশেষে মহেশতলার পালান ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটের বিধ্বংসী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। কিন্তু এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। দমকল বাহিনীর প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, শর্টসার্কিট থেকেই ওই রাসায়নিক কারখানায় আগুন লেগে গিয়েছিল।
গতকাল বেলা ১১ টা নাগাদ মহেশতলার মুখার্জি গেট সংলঘ্ন পালান ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটের একটি রাসায়নিক কারখানায় আগুন লেগে যায়। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে আশেপাশের কারখানায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশী ছিল যে একসময় কারখানার দেওয়াল হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে যায়। চারিদিক আগুনের লেলিহান শিখা ও কালো ধোঁয়ায় ভরে যায়। ওই সময় কারখানায় প্রায় ১২ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। ৫ জন শ্রমিক আগুনের ধোঁয়ায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিত্সার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রথমে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে। কিন্তু ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য একে একে দমকলের মোট ১৪ তি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়। এছাড়া আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে রোবটও নামানো হয়। দুপুরের দিকে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। অবশেষে রাত ৯ টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
দমকলের ডেপুটি ডিরেক্টর সনত্কুমার মণ্ডল বলেছেন, “কারখানার কাছাকাছি জলাশয় না থাকায় আগুন নেভাতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। পরে একটি কারখানার দেওয়াল ভেঙে পাশের পুকুর থেকে জল সংগ্রহ করা হয়। কারখানাগুলিতে রাসায়নিক এবং ভোজ্য তেল থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে ভয়াবহ আকার নেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মোট ৪ টি কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে একটি স্যানিটাইজার ও অন্যটি নারকেল তেলের কারখানা ছিল। বাকি দু’টি রাসায়নিক তৈরীর কারখানা।
এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মহেশতলার ওই এলাকার মধ্যে প্রায় ২৫০টি কারখানা রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া কারখানাগুলিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। দমকল আধিকারিক এবং মহেশতলা থানার পুলিশ এলাকাবাসীদের সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।