অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে পশ্চিমের জেলাগুলিও একেবারে নাজেহাল। কোথাও কোথাও তাপপ্রবাহের পরিস্থিতিও তৈরী হয়েছে। সেই আবহে এবার দু’দিনের জন্য সরকার রাজ্যের বিদ্যালয়গুলিতে ছুটি ঘোষণা করেছে। আজ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানান, ‘রাজ্যের পার্বত্য জেলাগুলি ব্যতীত অন্য সমস্ত জেলার সরকার ও সরকার পোষিত বিদ্যালয়গুলি চলতি সপ্তাহের শুক্রবার এবং শনিবার ছুটি থাকবে।
ওই দু’দিন রাজ্যের সমস্ত প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পঠনপাঠন হবে না। তাপপ্রবাহের কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ সংশ্লিষ্ট বোর্ড এবং সংসদ কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষকদের ওই দু’দিন বিদ্যালয়ে যেতে হবে কি না, তা ওই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে বলা নেই। ফলে বিভ্রান্তি তৈরী হয়েছে।
প্রায় মাসখানেকের গরমের ছুটির পর ২ রা জুন থেকে রাজ্যের বিদ্যালয়গুলি খুলেছে। তবে এই ক’দিনেই পড়ুয়ারা তীব্র গরমে নাজেহাল হচ্ছিল। সপ্তাহখানেক আগে বিদ্যালয় সংসদ (ডিপিএসসি) গরমের জেরে একাধিক জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে সকালবেলা ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সপ্তাহে পাঁচ দিন সকালবেলা ৬টা ৩০ মিনিট থেকে ১১টা অবধি এবং শনিবার সকালবেলা ৬টা ৩০ মিনিট থেকে ৯টা পর্যন্ত পঠনপাঠন চলবে বলে জানানো হয়।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
পরে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করার কথা জানায়। অথচ দুপুরবেলা ক্লাস করতে গিয়ে গত কয়েক দিনে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্রাথমিকের পড়ুয়াদের অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর আসছিল। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর থেকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদে এই বিষয়ে একাধিক অভিযোগও দায়ের হয়। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেখার জন্য সরকারকে চিঠি দেয়। ঘটনাচক্রে, এরপরই রাজ্য এই সিদ্ধান্ত জানায়।
প্রাথমিক শিক্ষা পরিষদের সভাপতি গৌতম পাল এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমাদের আইন মেনে কাজ করতে হয়। ডিপিএসসিগুলি নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। প্রথমে পশ্চিমাঞ্চলের দু’-একটি জেলা থেকে অভিযোগ আসছিল। গত কয়েক দিনে অতিরিক্ত গরমের কারণে একাধিক জেলা থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর এসেছে। তাই আমরা সরকারকে চিঠি দিয়েছি। সরকার সেই মতো সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।’’
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
অন্য দিকে, বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল এই বিষয়ে জানালেন, ‘‘এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখ থেকে যখন গরমের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল, তখনই প্রশ্ন তুলেছিলাম, এত আগেভাগে গরমের ছুটি দেওয়া হচ্ছে কেন? পুরো মে মাস জুড়ে যথেষ্ট ভালো আবহাওয়া ছিল। আর ঠিক যখন প্রচণ্ড গরম এবং আর্দ্র পরিস্থিতি, তখন বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে। তার চেয়ে এই খামখেয়ালিপনা বন্ধ করে পুরো বিষয়টা আগামী দিনে বিদ্যালয়ের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হোক।’’