ঠিকা শ্রমিকের মৃত্যুর জেরে কারখানা চত্বর জুড়ে চলে বিক্ষোভ

Share

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ আসানসোলঃ মঙ্গলবার রাতেরবেলা ইস্কোয় আসানসোলের মহিশীলার বটতলার বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সী সুজয় শীল নামে এক জন ঠিকা শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক শোরগোল শুরু হয়ে যায়।

কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, সুজয় পালিতে (শিফ্‌ট) সংস্থার বেসিক অক্সিজেন ফার্নেস বিভাগের ২৬ মিটার উঁচু কনভার্টারের মেঝেতে কাজ করছিলেন। হঠাৎ করে রাত প্রায় ১২ টায় অসুস্থ বোধ করলে তাকে সহকর্মীরা সেখান থেকে কারখানার ভিতরেই থাকা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।


কিন্তু শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হওয়ায় তাড়াতাড়ি বার্নপুর ইস্কো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা সুজয়কে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিকে মৃত্যুর খবর জানাজানি হওয়ার পরেই সহকর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। একাধিক সহকর্মীর অভিযোগ, “সুজয়ের কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের ফলেই মৃত্যু হয়েছে।”


/

আইএনটিইউসির ইস্কো শাখার সম্পাদক হরজিৎ সিংহ খবর পেয়ে রাতেরবেলা হাসপাতালে পৌঁছে মৃতের নিকটাত্মীয়কে চাকরী দেওয়ার দাবী জানান। এছাড়া কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় আশ্বাস না পেলে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যেতে দেওয়া হবে না বলেও জানানো হয়।


প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ চলার পর শেষমেশ এস প্রভাকরণ ও রণদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে কারখানার দুই জন আধিকারিক শ্রমিক নেতৃত্বের সাথে আলোচনায় বসে লিখিত ভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ উঠে যায়। এছাড়া সিটু, বিএমএস ও আইএনটিইউসি এই ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে।

অভিযোগে জানানো হচ্ছে যে, “বেসিক অক্সিজেন ফার্নেস এলাকাটি স্পর্শকাতর। কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস লিক হলে বোঝা যায় না। তাই নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হয়। এই কাজে কর্তৃপক্ষের নজরদারীর অভাব আছে।” সিটুর ইস্কো কারখানা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক সৌরিন চট্টোপাধ্যায়ও জানান, “কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস লিক করেই ওই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।বিএমএস তদন্ত চেয়ে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে।”

যদিও কারখানার জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে দাবী করা হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া অবধি মৃত্যুর কারণ নিয়ে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। তবে এই ঘটনার আধিকারিক পর্যায়ে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কর্তৃপক্ষের একটি সূত্রের এও দাবী যে, ওই শ্রমিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। কারণ বেসিক অক্সিজেন ফার্নেস বিভাগে কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের মাত্রা মাপার জন্য স্বয়ংক্রিয় মিটার বসানো আছে। বিপজ্জনক কিছু অনুমান করলেই মিটারে থাকা অ্যালার্ম বেজে ওঠার কথা।

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
May 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031