যুবকের মৃত্যুকে ঘিরে পথ অবরোধ সহ বিক্ষোভ চলে
দেবব্রত মন্ডলঃ বাঁকুড়াঃ বিনা চিকিৎসায় এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ তুলে পথ অবরোধ করলেন উত্তেজিত জনতা। এটি বাঁকুড়ার সিমলাপালের লক্ষীসাগরের ঘটনা। যদিও স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, সোমবার সকালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় স্থানীয় বনসারেঙ্গা গ্রামের শরৎ মণ্ডলকে (২৫) লক্ষীসাগর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। পরে তার সেখানেই মৃত্যু হয়। এই খবর পেয়ে বনসারেঙ্গা গ্রামের মানুষ লক্ষীসাগর সেন্টার মোড়ে এসে সিমলাপাল-খাতড়া রাস্তার উপর টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করেন।
তাদের অভিযোগ, “গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে এলেও কোনো চিকিৎসাই করা হয়নি। অবরোধের খবর পেয়ে বিজেপি নেতা ও তালডাংরা বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শ্যামল সরকার ঘটনাস্থলে আসেন”।
মৃতের স্ত্রী রিম্পা মণ্ডল জানান, “সকালে প্রাতঃকৃত্য সেরে আসার পর তার স্বামী শরৎ মণ্ডল অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তড়িঘড়ি তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলেও করোনার অজুহাতে চিকিৎসা তো দূরঅস্ত মূল দরজাই খোলা হয়নি। ফলে সম্পূর্ণ বিনা চিকিৎসায় তার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন”।
মৃতের ভাই গৌতম মণ্ডলের দাবী তুলে বলেন, “হাসপাতালে কর্তব্যরত দিদিমণিরা প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন। তাদের হাজারবার কাকুতিমিনতি করলেও কোনো চিকিৎসা হয়নি বলে তার পক্ষ থেকে দাবী করা হয়”।
বিজেপি নেতা শ্যামল সরকার বলেছেন, “শুধু লক্ষীসাগর নয়, তালডাংরা বিধানসভা এলাকার সর্বত্র স্বাস্থ্যক্ষেত্রে এক ছবি। চিকিৎসক নেই, নেই চিকিৎসা পরিকাঠামো। গরীব মানুষ স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত বলেও তিনি অভিযোগ করেন”।
সিমলাপালের বিএমওএইচ রামাশিস টুডু মৃতের পরিবারের দাবী সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, “তিনি তদন্ত করে দেখেছেন হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এই মুহূর্তে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ছুটিতে আছেন ও কর্তব্যরত নার্সরা ব্লক প্রাথমিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বললেও পরিবারের লোকজন সেকথা শোনেননি”।
এই ঘটনায় তৃণমূল নেতা এবং তালডাংরা বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অরুপ চক্রবর্ত্তী জানিয়ে দিয়েছেন, “শ্যামল সরকার জামা বদল করে রাজনীতি করছেন। তাদের আমলে জঙ্গল মহলে প্রকৃত উন্নয়ন হয়েছে। রাজ্যে চিকিৎসক কম আছে। গুজরাট থেকে কি চিকিৎসক আনা হবে বলেও এদিন তিনি প্রশ্ন তোলেন”।
তারপরে সিমলাপালের বিডিও, আই.সি সহ স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে আসেন। তাদের সম্মিলীত অনুরোধে অবরোধ উঠে যায়। পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্ত এবং মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।