নিজস্ব সংবাদদাতাঃ নদীয়াঃ নদীয়ার ভীমপুর থানার মলুয়াপাড়া সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়াকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দীর্ঘক্ষণ ধরে পথ অবরোধ চলে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী সীমান্তরক্ষী বাহিনী আন্তর্জাতিক সীমান্তে কাঁটাতার বসানোর ক্ষেত্রে উভয় দেশের প্রকৃত সীমান্ত থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ গজ অর্থাৎ ৪৫০ ফুট ভিতরে কাঁটাতার বসাতে পারবে। কিন্তু ওই নির্দেশিকাকে অমান্য করে সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও সিপিডব্লিউডি কোথাও ১,০০০ ফুট কোথাও ১,২০০ ফুট, কোথাও সর্বোচ্চ ১,৪৩০ ফুট ভিতরে কাঁটাতার বসানোর কাজ করছে।
আর এলাকাবাসীরা ওই কাঁটাতার সরিয়ে সর্বোচ্চ ১৫০ গজের মধ্যে কাঁটাতার বসানোর দাবীতেই বিক্ষোভ শুরু করেন। এমনকি কাঁটাতারের স্তম্ভগুলি উপড়ে ফেলেন। তাই সীমান্তরক্ষাবাহিনীর ৫৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ানদের সাথে বচসার জেরে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্র মারফত খবর যে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এই জেলায় এখনো বেশ কিছু অঞ্চল কাঁটাতার বিহীন অবস্থায় আছে। ফলে সীমান্তরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে চোরাচালান আটকাতে চাপড়া ব্লকের ফেনসিংহীন মলুয়াপাড়া, রাংগিয়াপোতা, মহাখোলা, হুদাপাড়া ইত্যাদি এলাকায় কাঁটাতার বসানো শুরু হয়।
উল্লেখ্য যে, ২০০২ সালে এখানে কাঁটাতার বসানোর প্রক্রিয়ায় নিয়ম ভাঙায় এলাকাবাসীরা আদালতের দ্বারস্থ হলে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি একে মাথুরের বেঞ্চ সীমান্তরক্ষা বাহিনীর হলফনামায় সন্তুষ্ট হয়ে কাজ চালিয়ে যেতে অনুমতি দেয়। তবে ২০০৩ সালে ফের এলাকাবাসীদের তরফ থেকে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করা হয়।
২০০৬ সালে তৎকালীন বিচারপতি নাদিয়া পাথারিয়া রায় ওই আবেদনের শুনানীতে জানান যে, কোনো ভাবেই সীমান্ত থেকে ১৫০ গজের বেশী গ্রামের ভিতরে ঢুকে কাঁটাতার বসানো যাবে না। ধর্মীয় স্থান, স্কুল-কলেজ, হাসপাতালের ক্ষেত্রে এই নির্দিষ্ট সীমানা প্রয়োজনে কমিয়ে দিতে হবে।
এদিকে আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে মলুয়াপাড়া গ্রামের ভেতর দিয়ে অস্থায়ী ভাবে কাঁটাতার বসানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে কাঁটাতারের ওপার অর্থাৎ বাংলাদেশের দিকে গ্রামের অর্ধেক অংশ চলে যাওয়ায় চুরি-ছিনতাই এবং অপহরণের মতো ঘটনার প্রেক্ষিতে এই কাঁটাতার দেওয়ার কাজ শুরু হয়।
জেলাশাসক শশাঙ্ক শেট্টি বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার কথা বলেন। সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর তরফ থেকে ডিআইজি জনসংযোগ একে আর্য অবশ্য বলেন, ‘‘সরকারী নির্দেশিকা অনুসারে কাজ হবে। কোনো নির্দেশ লঙ্ঘনের কোনো প্রশ্ন নেই।’’