অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ করোনা পরিস্থিতিতে গত ২২ শে মার্চ থেকে দীর্ঘ বেশ কয়েক মাস লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ ছিল। এরপর নানা টালবাহানার পর গত ৯ নভেম্বর থেকে করোনা বিধি মেনে লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু হয়েছে।
আর দীর্ঘক্ষণ ধরে ট্রেনে বসে থেকে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে অনেকেই বিরক্ত হয়ে যান। তাই যাত্রীদের মন ভালো রাখতে পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এবার থেকে লোকাল ট্রেনের সমস্ত কামরায় যন্ত্রসঙ্গীত ও রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজানো হবে।
পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের ডিআরএম সঞ্জয়কুমার সাহা বলেছেন, “পরীক্ষামূলক ভাবে কয়েকটি ট্রেনের আটটি কামরায় অ্যানাউন্সইং সিস্টেমের মাধ্যমে এই গান বাজানো হচ্ছে। ধীরে ধীরে সব লোকাল ট্রেনের কামরায় এই গান বাজানো হবে। এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য যাত্রীদের মনোরঞ্জন এবং দীর্ঘ ট্রেনযাত্রাকে আনন্দময় করে তোলা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর রাস্তার মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক সিগন্যালে রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজানো চালু করেন। তাই এবার রেলের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়ের অভিযোগ করেছেন, “বিজেপি সরকার মমতাদিকে নকল করছে। যা মানুষ ধরে ফেলবেন। আর এতে মমতাদিরই নম্বর বাড়বে”।
তবে হাওড়া জেলা বিজেপির সভাপতি সুরজিত্ সাহা বলেছেন, “এটা রেলের ভাল কাজ। তৃণমূল কংগ্রেস সব কিছুর মধ্যেই রাজনীতি দেখে। এমনকি কেন্দ্রের একাধিক জনমুখী প্রকল্প তৃণমূল সরকার নিজেদের বলে চালাচ্ছে। মানুষ তা খুব ভালোই বোঝেন।
রেলের এই ঘোষণায় খুব খুশি ট্রেনের নিত্যযাত্রীরা। তারা বাঙালীর সংস্কৃতিকে তুলে ধরার এই চেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন। ট্রেনের এক নিত্যযাত্রী শ্বেতা পাল জানিয়েছেন, “করোনা আবহে রেলের এই ধরনের প্রয়াস মনের পক্ষে স্বাস্থ্যকর। অবসাদ কাটাতে সাহায্য করবে”। অপরদিকে দেবলীনা সরকার নামে এক যাত্রী জানিয়েছেন, “সব কিছুর মধ্যে রাজনীতি না দেখাই ভালো। ভালো যাত্রী পরিষেবা পাওয়াটাই আসল কথা”।
তবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল রেলের এই সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক টোপ হিসেবে দেখছেন।