মিনাক্ষী দাসঃ কার্তিক মাসের ত্রয়োদশী তিথিতে অর্থাৎ দীপান্বিতা কালীপুজোর দু’দিন আগে ধনসম্পদ বৃদ্ধি ও পরিবারের সকলের মঙ্গল কামনা করে মা লক্ষ্মী, ধন্বন্তরি এবং কুবেরের পুজো করার চল রয়েছে। বিশেষ করে উত্তর ভারতের লোকেদের মধ্যে এই পুজোর রীতি রয়েছে। আর তারা ধনতেরস উপলক্ষ্যে সোনা, রুপো বা বিভিন্ন ধাতু কেনেন।
ইদানীং বাঙালীদের মধ্যেও ধাতু কেনার উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। কেউ সোনা-রুপোর গহনা কেনেন। আবার কেউ তামা-পিতলের বাসনপত্র কেনেন। কিন্তু সব নিয়মকে কেন্দ্র করে যেমন পৌরাণিক কিছু কাহিনী থাকে তেমন সব কিছুর পিছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও থাকে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
পাঁচ দিন ব্যাপী দীপাবলি উৎসবের প্রথম দিনে ধন্বন্তরির পুজো করার নিয়ম রয়েছে। তার মানুষের সাথে মহাজাগতিক সব যৌগের ভারসাম্য রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব। ধন্বন্তরির হাতে একটি ধাতুর পাত্র থাকে যার মধ্যে সাতটি আলাদা আলাদা ধাতু থাকে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
আয়ুর্বেদশাস্ত্র অনুযায়ী, অসুস্থ কোনো ব্যক্তির লক্ষণ বুঝে তাকে নির্দিষ্ট ধাতুর পাত্রে রান্না করে সেই খাবার খাওয়ালে সেই ব্যক্তির সব রোগ সেরে যায়। সেই থেকেই ধনতেরাসের দিনে বাসনপত্র কেনার চল। আগেকার দিনে রাজপরিবারে জন্মছক মিলিয়ে ধাতু কেনার চল ছিল। কিন্তু অনেকেই আবার জ্যোতিষশাস্ত্রে বিশ্বাস করেন না।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
এছাড়া, এই কাহিনীও প্রচলিত আছে যে, কোনো এক রাজার ছেলের কুষ্ঠীতে লেখা ছিল, বিয়ের চার দিনের মাথায় সাপের কামড়ে মৃত্যু হবে। স্ত্রীও সেই কথা জানতেন। তাই সেই অভিশপ্ত দিনে স্বামীকে ঘুমোতে দেননি। আর শোয়ার ঘরের বাইরে সব গহনা ও সোনা-রূপার মুদ্রা জড়ো করে রেখে সারা ঘরে বাতি জ্বালিয়ে দেন। স্বামীকে জাগিয়ে রাখতে সারা রাত গল্প-গান শোনান।
পরের দিন যখন মৃত্যুর দেবতা যম ঘরের দরজায় আসেন তখন আলো এবং গহনার জৌলুসে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। রাজপুত্রের শোয়ার ঘর অবধি পৌঁছালেও সোনার পাহাড়ের উপর বসে গল্প ও গান শুনেই সময় কেটে যায়। তখন ভোরবেলা কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই চলে যান। এদিকে রাজপুত্র প্রাণে বেঁচে যান। সেই থেকেই ধনতেরসের দিনটিতে সোনার গহনা কেনার রীতি প্রচলিত হয়।