নিজস্ব সংবাদদাতাঃ হুগলীঃ প্রবল বৃষ্টিতে দামোদর উপচে পড়ছে। এবার হুগলীর জাঙ্গিপাড়া ব্লকের বেশ কয়েকটি জায়গায় দামোদরের বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। জাঙ্গিপাড়ার মোড়হল, পসপুর, হরিহরপুর ও বৃন্দাবন চক এলাকার বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে বাঁধ থেকে জল অনবরত চুঁইয়ে চুইয়ে পড়ায় ক্রমশ মাটিও ধসে পড়েছে। হাওড়া-হুগলীর সংযোগকারী জাঙ্গিপাড়ার বকপোঁতা সেতুর রাস্তার উপর দিয়ে হু হু করে জল বইছে।
জাঙ্গিপাড়া ব্লকে প্রায় ৩ হাজার ২০০ হেক্টর আমন ধানের জমি ছাড়াও অনেক সবজি খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো প্রায় ৩ হাজার মানুষ জলমগ্ন হয়ে আছেন। তাই এলাকার বাসিন্দারা নৌকায় করে যাতায়াত করছেন। পাশাপাশি তারকেশ্বরের ব্লকের একাধিক এলাকা প্লাবিত হয়ে যাওয়ায় অনেকেই বাঁধের ওপর তাঁবু খাটিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার অনেকেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে ছাদের উপর সংসার শুরু করেছে।
জলের প্রকোপ ক্রমাগত বাড়তে থাকায় এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, “সব জল ঢুকে গেছে কিন্তু প্রশাসনের দেখা নেই। ভোটের সময় বালির বস্তা দিয়ে পাড় শক্ত করা হয়েছে”।
এই পরিস্থিতিতে তত্পরতার সাথে বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে। প্রশাসন বালির বস্তা ফেলে জল আটকানোর কাজ করছে আর স্থানীয় বাসিন্দারাও সেই কাজে হাত লাগিয়েছে। জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী বাঁধ নির্মাণ ঠিকঠাক চলছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান।
জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেছেন, “ইঁদুরে গর্ত এবং গাছের শিকড় থেকে বাঁধের কিছু কিছু জায়গায় লিকেজ দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই ২৭০০ কোটি টাকার বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। যে জায়গায় কাজটা কম হয়েছে সেখানে লিকেজ দেখা দিয়েছে। ইঞ্জিনিয়াররা ও সেচ দপ্তরের আধিকারিকরা জোরকদমে কাজ করছেন। শীঘ্রই বাঁধ মেরামতির কাজ হয়ে যাবে। মাটির বস্তা দিয়ে ব্যারিকেড তৈরী করা হচ্ছে। জলস্তরটা বেড়ে যাওয়ার জন্যেই এই ঘটনা ঘটেছে”।
হুগলী জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মানুষের পাশে আছি, অভিযোগ ঠিক নয়। জেলার কৃষি আধিকারিক জানিয়ে দিয়েছেন, ২৮ হাজার হেক্টর কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে”।