তৃণমূলকে ভোট দেওয়ায় মিলছে না একশো দিনের কাজ
দীপঙ্কর গোস্বামীঃ মালদাঃ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে একশো দিনের পুকুর খননের কাজ চলছে। কিন্তু সেই কাজে কংগ্রেস সমর্থিত শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত হচ্ছে। কাজ না পেয়ে তৃণমূল সমর্থিত শ্রমিকেরা ঘুরে যাচ্ছে।
আর এই নিয়েই মালদহের চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের মকদমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ট্যাঙরিয়া পাড়ায় স্বজনপোষনের অভিযোগ শুরু হয়েছে।
একশো দিনের কাজের প্রকল্পের মাধ্যমে পুকুর খনন করা হচ্ছে। অভিযোগ, টাঙরিয়া পাড়া গ্রামের তৃণমূল সমর্থিত শ্রমিকেরা কাজ চাইতে গেলে মকদমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ট্যাঙরিয়া পাড়া গ্রামের কংগ্রেসের মেম্বার হালিমা বিবির স্বামী জাহাঙ্গীর আলম ঘুরিয়ে দিচ্ছেন।
গ্রামের বিধবা বধূদের অভিযোগ, “তারা গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলে ভোট দিয়েছেন। তাই হালিমা বিবির স্বামী জাহাঙ্গীর আলম কাজ থেকে বঞ্চিত রাখছে।
কাজ চাইতে গেলে অসহায় বিধবা বধূদের দূরদূর করে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই পুকুর খননের কাজে ওই গ্রামের কংগ্রেস সমর্থিতদের নেওয়া হচ্ছে। তবে জবকার্ড থাকারা একশো দিনের কাজ পাচ্ছে। যার বেশীরভাগ কাজ কংগ্রেস সমর্থিত সমর্থকদের দেওয়া হচ্ছে”। যা নিয়ে স্থানীয় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা তীব্র ক্ষিপ্ত।
একশো দিনের কাজে বঞ্চিত শ্রমিকেরা স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে চাঁচল ১ নম্বর ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
কাজ না পেয়ে সার্জুনা বিবি অভিযোগ করে বলেন, “লকডাউনে স্বামী কর্মহীনতায় ভুগছে। গ্রামে একশো দিনের কাজ শুরু হয়েছে।সেই কাজ চাইতে গেলে ওই সাংসদের প্রতিনিধির স্বামী জাহাঙ্গীর আলম দলগত দৃষ্টিতে দেখছেন। এবছর আমরা নির্বাচনে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছি যার কারণে একশো দিনের কাজ থেকে বঞ্চিত রেখেছেন। আমরা এই ব্যাপারে বিডিওকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। পাশাপাশি এলাকার বিধায়ককেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। জবকার্ডধারী বঞ্চিত শ্রমিকরা কাজ না পেয়ে স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে অসহায়তার মধ্যে দিন গুজরান করছে”।
অবশ্য একশো দিনের পুকুর খননে স্বজনপোষনের অভিযোগটি ওই সংসদের মেম্বারের স্বামী জাহাঙ্গীর আলম অস্বীকার করে বলেছেন, “সিংহভাগ শ্রমিক মহিলা হলে কাজ এগোবে না। তবে মহিলাদেরও কাজে নেওয়া হয়েছে। যারা কাজ করছে তারা সর্বদলীয়”।
এদিকে অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন চাঁচল-১ নং ব্লকের বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্য্য নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছেন, “শ্রমিকদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। স্বজনপোষনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন”।
যদিও স্থানীয় তৃণমূল জহুর আহমেদের দাবী তুলে জানিয়ে দিয়েছেন, “কাজ যেন সবাই পায় সেটা পঞ্চায়েতকে দেখা উচিত। লকডাউনে দিনমজুর পরিবারেরা হতাশা গ্রস্ত রয়েছে। পঞ্চায়েত উপযুক্ত ব্যবস্থা না করে তাহলে দলীয়গত ভাবে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে”।
এই বিষয়টি নিয়ে মকদমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের দপ্তরে সাংবাদিকরা বিবৃতি নিতে গেলে প্রধানের অফিস ঘরের দরজায় তালা ঝোলানো রয়েছে দেখা যায়।