মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বেহাল রাস্তা নির্মাণের আবেদন স্থানীয়দের
শিবশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ঃ দক্ষিণ দিনাজপুরঃ ২০ বছরেরও বেশী সময় ধরে রাস্তা নির্মাণের দাবী জানিয়েও রাস্তা নির্মাণ না হওয়ায় এলাকার নির্বাচিত প্রতিনিধি ও আমলাদের উপর আস্থা হারিয়ে সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাস্তা নির্মাণের আবেদন গ্রামবাসীদের।
রাস্তা নির্মাণের দাবীতে স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিসে চক্কর কাটা তিতিবিরক্ত গ্রামবাসীদের বক্তব্য, “প্রায় ২০ বছরেরও বেশী সময় ধরে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ব্লকের এক নম্বর বোল্লা গ্রাম পঞ্চায়েতের বদলপুর দুর্গামন্ডপ এলাকা থেকে বৈদ্যপুর বেলতলি গ্রাম অবধি প্রায় চার কিলোমিটার মাটির রাস্তা চলাচলের একেবারেই অযোগ্য। খালে ভরা রাস্তা দিয়ে টোটো বা অ্যাম্বুলেন্স চলাচল তো দূরের কথা সাইকেল নিয়ে যাতায়াত এমনকি পায়ে হেঁটে যাতায়াত করাও যেন দুষ্কর হয়ে উঠেছে”।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন জলকুড়া, বৈদ্যপুর, পরগণাপুর, পশ্চিম জগন্নাথপুর সহ রমান মাস্টারপাড়া গ্রামের হাজার খানেক মানুষ এই পথ দিয়েই বদলপুরে যাতায়াত করে। শুধু তাই নয় বদলপুর এলাকায় স্বাস্থ্য কেন্দ্র, প্রাথমিক বিদ্যালয়, বদলপুর আর কে উচ্চ বিদ্যালয় আছে। এবং পশ্চিম জগন্নাথপুর থেকে কিছুটা দূরে শরণগ্রামে গৌড় গ্রামীণ ব্যাঙ্কের শাখা রয়েছে। যদিও গ্রামবাসীদের বক্তব্য, “খাল-খন্দ ভরা এই পথ সামান্য বৃষ্টির জেরে চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠার কারণে গ্রামের এই পথ দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত ও ওই সমস্ত গ্রামের সাধারণ মানুষদের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাতায়াত করা কার্যত প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে”।
তাই গ্রামবাসীরা জানান, “দীর্ঘদিনের এই সমস্যার নিরসন হোক এবং গ্রামের এই রাস্তাটি নির্মাণ করা হোক”। দীর্ঘদিন রাস্তা নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা এদিন প্লাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি স্থানীয় পঞ্চায়েত-আমলাদের উপর আস্থা হারিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজেদের ক্ষোভ উগড়ে দেন।
গ্রামবাসীদের মধ্যে অলোকা দাস সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আবেদন জানিয়ে বলেন, “আমাদের রাস্তা কেউ করে দিল না। মমতা দিদি আমাদের রাস্তা করে দাও”।
গ্রামের অন্য একজন বাসিন্দা জয়দীপ দাস বলেছেন, “আমরা ধান সিদ্ধ করছি কিন্তু এই কাদা রাস্তায় মিলে ধান ভাঙাতে নিয়ে যাব কীভাবে?”
ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের মধ্যে অন্যতম নকুল দাস বললেন, “রাস্তা নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়ে গেছে। তবু আমাদের কেউ রাস্তা করে দিচ্ছে না। একটা অঘটন ঘটলেও রাস্তা এতটাই খারাপ যে এখানে অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত ঢুকবে না। আমরা খুব দুঃখ-কষ্টে আছি। আমরা রাস্তা চাইছি”৷
গ্রামের আরো একজন বাসিন্দা অরুণ দাসের অভিযোগ যে, “অনেকবার পঞ্চায়েতে দরবার করেও পঞ্চায়েতের প্রধান রাস্তার বেহাল দশা দেখতেও আসেননি”।
অপরদিকে রাস্তা নির্মাণ প্রসঙ্গে এক নম্বর বোল্লা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পলি পাল জানিয়ে দিয়েছেন, “ভোটের আগে রাস্তাটা অনুমোদন হলেও এখনো রাস্তার কাজ শুরু হয়নি তা আমি বলতে পারব না। এটা ব্লক থেকে খবর নিতে হবে। আমরাও চাইছি রাস্তাটা হয়ে যাক। প্লান পাশ হয়ে গেছে এখন ব্লকের সম্পূর্ণ দায়িত্ব। এছাড়া ব্লকের আধিকারিক ডেকেছিল আমরা গিয়েছিলাম এখন রাস্তা করবে কবে সেটা আমরা বলতে পারছি না”।