নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মেদিনীপুরঃ পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে এনআইএ (ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি) আক্রান্ত হয়েছে। এবার তা নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদারের দাবী, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই এই ঘটনা ঘটেছে। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিচারব্যবস্থার হস্তক্ষেপ করা উচিত।’’ পাল্টা তৃণমূল গোটা বিষয়টিকে বিজেপির চক্রান্ত বলে অভিহিত করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে ভূপতিনগরে এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় তৃণমূলের বুথ সভাপতি সহ অন্তত তিন জনের মৃত্যু হয়। প্রথমে ভূপতিনগর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত আরম্ভ করে। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে এনআইএ তদন্তভার হাতে নেয়। এই মামলাতেই তদন্তকারী সংস্থাটি ভূপতিনগরের বাসিন্দা বলাই মাইতি এবং মনোব্রত জানাকে তলব করেছিল। কিন্তু বলাই ও মনোব্রত তলবে সাড়া না দেওয়ায় এনআইএ অভিযানে নামতেই তাদের গ্রেফতার করে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
এরপরই এনআইএর আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ ওঠে। তাদের গাড়িতে হামলা চালানো হয়। এই বলাই এবং মনোব্রত এলাকায় তৃণমূলের কর্মী বলে পরিচিত। এনআইএর দাবী, ‘‘গ্রামে অভিযানে যাওয়ার কথা জানিয়ে স্থানীয় থানার কাছে বাহিনী চাওয়া হয়েছিল।’’ তবে পুলিশ জানিয়েছে, ‘‘এনআইএ বাহিনী দেওয়ার আগেই অভিযানে নেমে পড়ে।’’ যদিও এনআইএর সাথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা ছিল। এনআইএ এই ঘটনায় থানায় লিখিত ভাবে অভিযোগ জানিয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে পদ্ম শিবির রাজ্য সরকারের দিকে আক্রমণ শানিয়েছে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
সুকান্ত মজুমদার জানান, ‘‘পুরো বিষয়টি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ঘটেছে। স্থানীয় মানুষ নন, এরা চিহ্নিত তৃণমূল নেতা-কর্মী। যে ভাবে একের পর এক কেন্দ্রীয় এজেন্সির উপর আক্রমণ হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গকে দেখে মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে আফগানিস্তানে পরিণত হয়ে গিয়েছে। আমার মনে হয়, কেন্দ্রীয় সরকার, কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি ও বিচারব্যবস্থার খুব তাড়াতাড়ি হস্তক্ষেপ করা উচিত। নচেৎ, পশ্চিমবঙ্গ আগামী দিনে ভারতের অঙ্গরাজ্য থাকবে, না কি থাকবে না তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। বার বার দেশবিরোধী শক্তির সাথে তৃণমূলের নাম জড়িয়ে যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনেরও এই দল সম্পর্কে ভাবা উচিত।’’
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
এদিকে, রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘ভূপতিনগরের ঘটনা অবাঞ্ছিত, অনভিপ্রেত। এর পিছনে একটি গভীর প্রেক্ষিত কাজ করছে। বিজেপি ইডি (এনফোর্সমেন্ট), সিবিআই (সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন), এনআইএকে ব্যবহার করছে। আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল, কিছু দিন আগে বিজেপির নেতারা এনআইএর এক অফিসারের সাথে বসে নাম ঠিক করে দিচ্ছেন। তৃণমূলের নেতাদের, সংগঠকদের ধরতে হবে, সমন পাঠাতে হবে। যে অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে, তা তো বিজেপির বানানো। তৃণমূল কর্মীদের নাম দিয়ে দিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে। ফলে যখন সাতসকালে, কাকভোরে বহিরাগত অনেকে তাদের ধরতে যাচ্ছে, স্বাভাবিক ভাবেই এলাকায় একটা উল্টো স্পন্দন ঘটছে। আমরা বলছি, এই ঘটনা অবাঞ্ছিত। তবে এর পিছনে একটা অঙ্ক কষা দাবার বোর্ড রয়েছে।’’