রায়নায় বৃদ্ধকে খুনের ঘটনায় আটক ১ বিজেপি নেতা সহ ৩ জন

Share

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বর্ধমানঃ গত ৯ ই মার্চ সন্ধ্যাবেলা বৃদ্ধ জীবনকানাই সেনগুপ্তকে টাকা লুঠের জন্য বর্ধমানের রায়নার পোস্টঅফিস পাড়ার বাড়িতে নির্মম ভাবে খুন করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের পরে জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে এসডিপিও আমিনুল ইসলাম খান একটি বিশেষ দল গঠন করে তদন্ত শুরু করেন।

এই ঘটনার ঠিক ন’দিনের মাথায় অর্থাৎ গতকাল রাতে পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থাকা বিজেপি নেতা ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর থেকে সিরাজউদ্দিনকে আর বাকি দুজনকে বর্ধমান থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করলো। পুলিশী জেরায় ধৃতরা সমস্ত অপরাধ স্বীকার করেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ধৃতদের নাম জয়ন্ত সাঁতরা, গৌতম মণ্ডল, সিরাজউদ্দিন মণ্ডল ওরফে টগর শেখ। এরমধ্যে জয়ন্ত বর্ধমানের বেলকাশের বাসিন্দা। আর গৌতম এবং সিরাজউদ্দিন সরাইটিকর বেচারহাট এলাকার বাসিন্দা। এছাড়া ধৃত জয়ন্ত বর্ধমান উত্তর বিধানসভার ২৭ নম্বর জেলা পরিষদের বিজেপির শক্তিকেন্দ্র। এমনকি ধৃতদের মধ্যে গৌতম ও সিরাজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় নানা অপরাধ মূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগও আছে।


এসডিপিও জানান, “ফোন সহ বিভিন্ন সূত্র মারফত অভিযুক্তদের নাগাল পাওয়া গেছে। আর ধৃতদের মধ্যে সিরাজের শাশুড়ি নিহতের বাড়িতে আয়ার কাজ করত। তার কাছ থেকেই ধৃতরা জানতে পারে যে রায়না পোস্ট অফিসপাড়ার একটি বাড়িতে শুধু তিনজন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা থাকেন। সেই বৃদ্ধর ঘরের আলমারিতে কয়েক লক্ষ টাকা রয়েছে। এমনটা শোনার পর থেকেই সিরাজ ওই টাকা লুট করার ছক কষতে শুরু করে। বন্ধু গৌতমও সিরাজের সঙ্গে সেই পরিকল্পনাতে যোগ দেয়।

এই ঘটনা ঘটানোর আগে তারা এলাকায় ঘুরে যায়। আর খুনের ঘটনার দিন জয়ন্তকে সঙ্গে নিয়ে গৌতমের মোটরবাইকে চড়ে তিনজন রায়না বাজারে আসে। তারা বৃদ্ধর বাড়ির কিছুটা দূরে মোটরবাইক রেখে পাঁচিল টপকে বৃদ্ধর বাড়ির ভিতরে ঢোকে। তখন বৃদ্ধ জীবনকানাইবাবু ঘরের একটি চেয়ারে বসে টিভি দেখছিলেন। তিনি তিনজন যুবককে দেখে চিত্‍কার শুরু করে দিলে যুবকরা বন্দুক দেখিয়ে তার মুখ চিপে ধরে বৃদ্ধকে ভয় দেখায়। ঠিক তখনই দুর্ঘটনাটি ঘটে যায়”।


আজ ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হবে। পুলিশ দোষীদের নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানান। অন্যদিকে মৃতের পরিবার অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন।

জয়ন্ত সাঁতরার গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গে জেলা বিজেপি যুব নেতা শ্যামল রায় অবশ্য বলেছেন, ”আমাদের নেতাকে ভোটের মুখে সূযোগ বুঝে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে”। ভোটের মুখে খুনের ঘটনায় বিজেপি নেতার নাম জড়ানোয় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে।


 

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930