নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মুর্শিদাবাদঃ বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে নানা পর্যটনকেন্দ্র ছড়িয়ে আছে। একেকটি জায়গার তাৎপর্য একেক রকম। কোথাও নিছকই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নজর কাড়ে আবার কোথাও ইতিহাস বা পৌরাণিক গন্ধ মিশে আছে। এবার মুর্শিদাবাদের লালবাগ মহকুমার আজিমগঞ্জে অবস্থিত বড়নগর দেশের ‘বেস্ট ট্যুরিজম ভিলেজ’ এর তকমা পেল। ভাগীরথীর তীরে এই গ্রামে গেলে এখনো ঐতিহাসিক ছোঁয়া পাওয়া যাবে।
এই বড়নগরে রানী ভবানীর প্যালেস ও চার বাংলা মন্দির আছে। এই দু’টিই মূলত এখানকার আকর্ষণ। যা দেখতে বহু মানুষ ভিড় করেন। বড়নগরে টেরাকোটা মন্দির কমপ্লেক্সের অধীনে চার বাংলা মন্দির ছাড়াও আদ্যা মন্দির, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, ভবানীশ্বর মন্দির, গঙ্গেশ্বর শিব মন্দির, পঞ্চমুখী শিব মন্দির, রাজরাজেশ্বরী মন্দির সহ ইত্যাদি মন্দির রয়েছে। মন্দিরের গায়ে হিন্দু পুরাণের নানা ঘটনাবর্ণিত ছবি রয়েছে। রানী ভবানী থাকাকালীন এই বড়নগর গ্রামটি ‘ভারতের বারাণসী’ নামে পরিচিত ছিল।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
আর এই বড়নগরের সামনেই ভাগীরথী নদী বয়ে যাচ্ছে। আর এর তীরে অবস্থিত এই গ্ৰামে ৩৫০ বছর আগে শিবের মন্দির তৈরী হয়েছিল। এলাকাবাসীর কথা ভেবে বাংলাদেশের নাটোরের রানী ভবানী কাশির বিশ্বনাথের আদলে ১০৭ টি শিব মন্দির স্থাপন করেছিলেন। এখানে কাশী বিশ্বনাথের মত গঙ্গা আরতিও হয়। তবে আজ ধ্বংসপ্রায় অনেক মন্দির। রানীর এক জন বংশধর জানান, ‘‘৩৫০ বছর আগে একই দিনে একই সময় এই ১০৭টি মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর থেকে রানী ভবানী নিজে সব দেখাশোনা করতেন। সেই স্মৃতি বরানগরের এই মন্দির আজও কোনোক্রমে বহন করে চলেছে।’’
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
অন্যদিকে, বড়নগর প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য বহন করছে। এই গ্রামের বাসিন্দারা অনেকে তাঁত শিল্পের সাথে যুক্ত থাকায় জামদানি, বালুচরি, টাঙ্গাইলের মতো সুক্ষ্ম বস্ত্র উৎপাদন করেন। এছাড়া, বাঁশ ও বেতের কারুশিল্প, মৃৎশিল্পের সাথে অনেকে জড়িত। পাশাপাশি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরাও সক্রিয়। আর পর্যটকদের সুবিধার জন্য অনেক হোমস্টেও রয়েছে। এই গ্রাম থেকে কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেই আবার হাজারদুয়ারি রয়েছে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই খবর প্রকাশ করে জানান, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের পর্যটন মন্ত্রকের কৃষি-পর্যটন বিভাগের প্রতিযোগীতায় ‘সেরা পর্যটন গ্রাম’ এর তকমা পেয়েছে মুর্শিদাবাদের বড়নগর গ্রাম, এই খবরে আমি আপ্লুত। এই রাজ্যে যে অনন্য ভান্ডার রয়েছে, আরো বেশী করে তার প্রচার করে আমরা বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেব। আগামী ২৭ শে সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবসে কেন্দ্রের ‘সেরা পর্যটন গ্রাম’ এর পুরস্কার বাংলার হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’