অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ শেখ শাহজাহানের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ’ করলো ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে খবর, শাহজাহানের একটি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ও তার মাছ ব্যবসা সংক্রান্ত সংস্থা ‘মেসার্স শেখ সাবিনা ফিশ সাপ্লাই ওনলি’-র একটি অ্যাকাউন্টে যাবতীয় আর্থিক লেনদেন বন্ধ করতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো দু’টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে।
আর আরো বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন সংক্রান্ত তথ্যও চাওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে, শাহজাহানের একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১৩৭ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। ইডির দাবী, ‘‘২০১১ সাল থেকে ২০২৩ সাল অবধি চিংড়ি রপ্তানীর নামে এই টাকা পাচার করেছেন। কলকাতার দু’টি চিংড়ি রপ্তানী সংস্থার সাথে শাহজাহানের সংস্থার ১০৪ কোটি এবং ৩৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। আর তার সাথে সন্দেশখালির একাধিক ভেড়ি কারবারির যোগ রয়েছে।’’
এছাড়া প্রায় পনেরোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তদন্তকারীদের নজরে রয়েছে। নিয়ম মেনে এই অ্যাকাউন্টগুলিতে আর্থিক লেনদেন হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইডি সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল, শাহজাহান মাছের ব্যবসার আড়ালে নানা কুকর্মের মাধ্যমে অর্জিত কালো টাকা সাদা করত। অর্থাৎ প্রথমে শাহজাহান কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার হাতে নগদ অর্থ তুলে দিতেন। এরপর ওই টাকা ব্যাঙ্কের মাধ্যমে নিজের অ্যাকাউন্টে জমা করাতে বলতেন। আর নিজের মাছ বিক্রি সংক্রান্ত সংস্থার নাম মেয়ের নামে রেখেছিলেন।
তার বিরুদ্ধে ইডির তরফে দু’টি ইসিআইআর (একটি রেশন বণ্টন দুর্নীতি ও একটি বেআইনী ভাবে জমি দখল এবং মাছ চাষ) রয়েছে। এমনকি মাছ আমদানি-রপ্তানীর মাধ্যমে বিদেশে কোটি কোটি টাকা বেআইনী লেনদেনের মামলাও রয়েছে। গত শুক্রবার শাহজাহানকে সিবিআইয়ের (সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন) হেফাজত থেকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছিল।
বেআইনী ভাবে জমি দখল ও মাছ আমদানি-রপ্তানী ব্যবসার মামলায় শনিবার সকালবেলা শাহজাহানকে ইডির আইনজীবীরা সংশোধনাগারে গিয়ে জেরা করার আবেদন করেন। আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করে। এরপরেই শনিবার দুপুরবেলা থেকে বিকেলবেলা পর্যন্ত তাকে ইডির তদন্তকারীরা সংশোধনাগারে গিয়ে জেরা করেন। তারপরই শাহজাহানকে গ্রেফতার (শোন অ্যারেস্ট) করা হয়।