নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বাঁকুড়াঃ সিপিএমের ৬১ বছরের ইতিহাসে নতুন পরিবর্তন এলো। বাঁকুড়ায় সিপিএমের জেলা সম্মেলনে এবার কোনো মহিলাকে দলের জেলা সম্পাদক হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। সেই মতো দলের দীর্ঘ দিনের নেত্রী দেবলীনা হেমব্রম দায়িত্ব পেলেন। ১৯৬৪ সালে সিপিআই ভেঙে সিপিএম আত্মপ্রকাশ করেছিল। সেই থেকে এখনো অবধি দলে কোনো মহিলাকে জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এই প্রথম ইতিহাস পাল্টালো। নারী হিসাবে তো বটেই, আদিবাসী হিসাবেও দলে নজির তৈরী হলো।
১৯৯৬ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দেবলীনা হেমব্রম রানিবাঁধের বিধায়ক ছিলেন। ২০০৬ থেকে ২০১১ সাল অবধি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকারের আমলে অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ উন্নয়নমন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। আর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। সিপিএমের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কেন্দ্র, রাজ্য ও জেলা স্তরে একসাথে তিনটি দায়িত্বে কোনো এক জন থাকতে পারেন না। বাঁকুড়ার দায়িত্ব গ্রহণে দেবলীনা হেমব্রমের ক্ষেত্রে সেই নিয়মের ‘ব্যতিক্রম’ হল। ২০২২ সালে কেরলের কুন্নুরে সিপিএমের শেষ পার্টি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তাঁকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যও করা হয়।

- Sponsored -

এক সময়ে বাঁকুড়া ছিল সিপিএমের শক্ত ঘাঁটি। কিন্তু ২০১১ সালের পর থেকেই সেই ‘শক্তি’ ক্ষয়িষ্ণু। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকে দেখা যায়, পশ্চিমাঞ্চলের অন্যান্য জেলা এবং রাজ্যের অন্য অংশের মতো বাঁকুড়াতেও সিপিএমের সঙ্গে থাকা ভোট বিজেপির দিকে চলে গিয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে যে আদিবাসী অংশের ভোট সিপিএমের ‘পুঁজি’তে পরিণত হয়েছিল, সেই জনসমর্থনও তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে ভাগ হয়ে গিয়েছে। বাঁকুড়ায় এখন সিপিএমের জনসমর্থন নেই। ভোটেও তার প্রতিফলন ঘটছে বার বার। কিছু দিন আগে তালড্যাংরার উপনির্বাচনে সিপিএম জামানত রক্ষা করতেও পারেনি। সেই বাঁকুড়ায় আদিবাসী নেত্রীকে জেলা সম্পাদক করে সিপিএম ভোটের খরা কাটাতে চাইল বলে মনে করা হচ্ছে।