নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বাঁকুড়াঃ বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ব্লকের খুদিপাথর গ্রামের অত্যন্ত করুণ অবস্থা। সেখানে রাস্তাও হয়নি। পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থাও নেই। এমনকি মানুষের হাতে কাজও নেই। বার বার স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতে জানিয়েও লাভ না হওয়ায় এবার পঞ্চায়েত ভোট বয়কটের ডাক দিলেন।
খুদিপাথর আদিবাসী গ্রামটি রাজাকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। গ্রামে সব মিলিয়ে ষোলোটি আদিবাসী পরিবারের বাস। সব পরিবারই কৃষিনির্ভর। কিন্তু বেশীর ভাগ পরিবারের হাতে যা জমি রয়েছে, ওই জমির উৎপাদিত ফসলে সারা বছর সংসার চলে না। বহু দিন ধরে একশো দিনের কাজও নেই। অগত্যা পার্শ্ববর্তী টিলা থেকে পাথর বয়ে এনে তা ভেঙে কোনো ক্রমে দিনপাত করেন।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
গ্রামে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটি কাঁচা। বর্ষায় ওই রাস্তার মাটি ধুয়ে এবড়ো-খেবড়ো পাথরের চাঁই বেরিয়ে পড়েছে। তা ডিঙিয়েই গ্রামের মানুষ চলাফেরা করেন। আর পানীয় জলের জন্য যে একটি ট্যাপকল ও নলকূপ রয়েছে তাও মাঝেমধ্যেই বিকল হয়ে মাসের পর মাস পড়ে থাকে। এছাড়া ট্যাপকলের সাহায্যে যে নলবাহিত পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে, তাতেও ঠিকঠাক জল আসে না।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
ফলে গ্রামবাসীরা চরম সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। এই বিষয়গুলি নিয়ে বার বার স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে বিডিও অফিসে জানালেও কোনো প্রকার সমাধান না হওয়ায় বাধ্য হয়েই ভোট বয়কটের ডাক দিলেন। আর তাই গ্রামের দেওয়ালে দেওয়ালে ভোট বয়কটের সমর্থনে দেওয়াল লিখন করা হয়েছে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
গ্রামের বাসিন্দা অর্চনা হাঁসদার কথায়, ‘‘ভোট এলেই আমাদের গ্রামে বিভিন্ন দলের নেতারা আসেন। প্রতি বার ভোটের আগে নেতারা নানা প্রতিশ্রুতিও দেন। তবে ভোট পেরিয়ে গেলে সকলে ভুলে যান। অতএব এবার আর ভোট নয়। যতক্ষণ না আমাদের গ্রামের রাস্তা মেরামত করা হচ্ছে এবং পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
স্থানীয় সিপিএম নেতা গৌতম মাহাতো জানান, ‘‘গ্রামের রাস্তার হাল ও পানীয় জল সরবরাহ ভীষণ খারাপ। এই গ্রামের মানুষেরা সব দিক থেকেই বঞ্চিত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জঙ্গলমহল হাসছে।’’ কিন্তু জঙ্গলমহলের আসল ছবি এটাই।’’
তৃণমূলের রানিবাঁধ ব্লক সভাপতি তথা বাঁকুড়া জেলা পরিষদের বিদায়ী সদস্য চিত্ত মাহাতো বলেছেন, ‘‘ওই এলাকার মাটি খুব শক্ত হওয়ায় শুখা মরসুমে পাইপ লাইন বসানো জটিল। বর্ষার জন্য অপেক্ষা চলছে। ভোট মিটে গেলেই পাইপ লাইন বসানোর কাজ শুরু হবে। পঞ্চায়েত ভোট বয়কট করলে ওই গ্রামের মানুষই পরবর্তীতে সমস্যায় পড়বেন। আমরা সে কথা গ্রামবাসীদের জানিয়ে ভোট বয়কট প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছি।’’