নিজস্ব সংবাদদাতাঃ আসানসোলঃ আসানসোলের সিটি বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া রেলের জমিতে থাকা পুরোনো ভবনে গড়ে ওঠা বেসরকারী বিদ্যালয়ের তালা ভেঙে যাবতীয় আসবাবপত্র আগেই বের করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর মঙ্গলবার রাত প্রায় ২ টো নাগাদ রেল বুলডোজার দিয়ে গোটা বিদ্যালয়টি ভেঙে দিয়েছে।
এর প্রতিবাদে গতকাল তৃণমূল স্থানীয় ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় ও আসানসোল মোটর ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়নের আহ্বায়ক রাজু অহলুওয়ালিয়াদের নেতৃত্বে জেলার ডিআরএম কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখায়।
অভিযোগ করেন, গোটা দেশ জুড়েই বিজেপি ‘বুলডোজার-সংস্কৃতি’ আমদানি করেছে। এই ঘটনা ফের তা প্রমাণ করল। এছাড়া গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “কেন্দ্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বেসরকারী সংস্থাকে জমি বিক্রি করছে। কোনো সামাজিক কাজ করতে চাইছে না।
উল্টে, কেন্দ্রের বিভিন্ন সংস্থা বিজেপির আদর্শ মেনে বুলডোজ়ার-সংস্কৃতির মাধ্যমে দিল্লি থেকে উত্তরপ্রদেশ সর্বত্র ভয়ের পরিবেশ তৈরী করছে। এ ক্ষেত্রেও সে চেষ্টা হয়েছে।”
যদিও বিজেপির জেলা মুখপাত্র শঙ্কর চৌধুরী অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “ভিত্তিহীন কথাবার্তা। রেলের জমি এবং ভবনে গজিয়ে ওঠা দখলদার উচ্ছেদ হোক। এটা আমাদেরও চাওয়া। একইসাথে রেলপাড়েও উচ্ছেদ অভিযান হোক, সেই দাবী জানাই।”
এদিন বিক্ষোভকারীরা আরপিএফ গেট আটকে গেটেই বিক্ষোভ-অবস্থান শুরু করেন। এরপর বেশ কিছুক্ষণ এই অবস্থা চলার পর রেল কর্তৃপক্ষের তরফে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। আর রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, বিদ্যালয়টি খুব বিপজ্জনক হওয়ায় নিরাপত্তার স্বার্থে তা ভেঙে ফেলা হয়েছে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় ৪০ বছর ধরে ওই বিদ্যালয় চলছে। তবে রেলের জমিতে থাকা ওই ভবনে বিদ্যালয় চালানোর জন্য রেলের কোনো লিখিত অনুমতিপত্র ছিল না। আবার সরকারী বোর্ডের অনুমোদন না থাকায় পড়ুয়াদের অষ্টম শ্রেণী্র পর ভিন্ রাজ্যের বোর্ড থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ানোর ব্যবস্থা ছিল।
বিদ্যালয় ভেঙে দেওয়ায় বিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রামাসিহাসি পাসোয়ান জানান, “এখনও প্রায় আড়াইশো জন পড়ুয়া আছে। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।” অন্যদিকে রেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বিদ্যালয়ের জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করা হবে কিনা সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।