রায়া দাসঃ কলকাতাঃ আলুব্যবসায়ীরা রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্নার সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে কোনো সমাধান না পাওয়ায় ধর্মঘটের সিদ্ধান্তে অনড় থাকলেন। আর ঘোষণা মতো আলু সরবরাহ বন্ধ রাখলেন। গতকাল মধ্যরাত থেকে রাজ্যের প্রায় কোনো হিমঘরের শেডে আলুর বস্তা না নামায় আজ সকালবেলা থেকেই খোলা বাজারে আলুর জোগানে টান পড়েছে। আর আশঙ্কা মতো, রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে আলুর দাম বেড়েছে। কোথাও প্রতি কেজিতে দু’টাকা, কোথাও কোথাও আবার আট টাকা থেকে ন’টাকা অবধি আলুর দাম বেড়েছে। ফলে ক্রেতাদের সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
মূলত, ভিন্রাজ্যে আলু পাঠানোয় প্রশাসনিক কড়াকড়ি শুরু হয়। পুলিশ রাজ্যের সীমানায় আলুবোঝাই গাড়ি আটকে দেওয়ায় এই রাজ্যের আলু ব্যবসায়ীরা অন্য রাজ্যে আলু পাঠাতে না পারায় ধর্মঘটের হুঁশিয়ারী দিয়েছিলেন। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি জানিয়েছিল, ‘‘এই বিষয়ে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’ কিন্তু ধর্মঘটের পরিস্থিতি তৈরী হওয়ার আগেই গতকাল বেচারাম মান্না জট কাটাতে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি ও রাজ্যের হিমঘর মালিক সংগঠনকে নিয়ে খাদ্য ভবনে বৈঠক করেন। সেখানে সরকারের তরফেও ধর্মঘট প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছিল।
তবে আলু ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ‘‘সীমানায় আলুর গাড়ি আটকানো বন্ধ না হলে তাঁরাও ধর্মঘটের রাস্তা থেকে সরতে পারবেন না।’’ ফলে এদিন রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে আলুর দামে প্রভাব পড়েছে। জেলার বিভিন্ন জায়গাতেই ৩৬ টাকা-৩৭ টাকা কিলো দরে জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে। আর ৪০ টাকা কিলো দরে চন্দ্রমুখী আলু বিক্রি হচ্ছে। খুচরো বিক্রেতারা জানান, ‘‘সোমবার অবধি ৩২ টাকা কিলো দরে আলু বিক্রি হয়েছে। কিন্তু আজ আলুর জোগান কম থাকায় বস্তায় দু’শো টাকা বেশী দামে আলু কিনতে হচ্ছে। তাই দাম বৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়েছেন।’’
জোগান ঠিক রাখতে রাজ্য সরকার জানায়, ‘‘টানা বৃষ্টির জন্য নতুন আলুচাষ পনেরো দিন পিছিয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ যে নতুন আলু আমরা ডিসেম্বর মাসের ২০ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে বাজারে পেতাম, এবার তা পেতে পেতে জানুয়ারী মাস। তাই পুরোনো আলুর উপরই ভরসা করতে হবে। আমাদের রাজ্যে এখন যা আলু আছে, তা আগামী ৪০-৪৫ দিনের জন্য পর্যাপ্ত। তাই এই পরিস্থিতিতে আলু বাইরে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই।’’ অন্যদিকে, পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সভাপতি উত্তম পাল জানান, ‘‘এদিন রাজ্য ব্যবসায়ী সমিতির অফিসে বৈঠক হবে। সেখানেই পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’