শিশুকে গণধর্ষণ করে শীঘ্র সৎকারের উপদেশ দিল অপরাধীরা

Share

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ নয়া দিল্লিঃ ফের রাজধানীর বুকে ঘটলো হাড় হিম করা ঘটনা। খুদে শিশুকে আবারো সমাজের কিছু নর পিশাচদের লোভ-লালসার শিকার হতে হলো।

সূত্রের ভিত্তিতে জানা গেছে, দিল্লির ক্যান্টনমেন্ট এরিয়ার পুরানা নাঙ্গাল অঞ্চলে ন’বছরের এক শিশুকন্যা মা-বাবার সাথে বাস করত। গতকাল বিকেলবেলা মেয়েটি জল আনতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি। তাদের বাড়ি শ্মশানের কাছেই। সন্ধ্যা ৬ টা নাগাদ শ্মশানের পুরোহিত রাধেশ্যামের পরিচিত কয়েকজন মেয়েটির মাকে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন শ্মশানে মেয়ের মৃতদেহ পড়ে আছে। তখন রাধেশ্যামের পরিচিত ব্যক্তিরা বলেন, “মেয়েটি কুলার থেকে জল নেওয়ার সময় বিদ্যুত্‍স্পৃষ্ট হয়েছে”।


কিন্তু মেয়েটির মা বলেন, “মেয়ের কবজিতে ও কনুইয়ে পোড়া দাগ আছে। ঠোঁট নীল হয়ে গেছে”। তবে পুরোহিত এবং তার সঙ্গীরা মেয়েটির মাকে পুলিশের কাছে খবর দিতে বারণ করেন কারণ পুলিশে খবর দিলেই ময়নাতদন্ত হবে। তাতে দেহের নানা অঙ্গ চুরি হয়ে যাবে। তার চেয়ে মেয়ের দেহের সত্‍কার করে ফেলাই ভাল। এরপর মেয়েটির মা-বাবা মৃতদেহ সত্‍কারে রাজি হয়ে যান।


পরে অবশ্য মেয়েটির মা এলাকাবাসীদের সব জানালে এলাকার ২০০ জন লোক শ্মশান ঘেরাও করে। পুলিশেরকাছেও খবর দেওয়া হয়। সাউথ ওয়েস্ট ডিস্ট্রিক্ট পুলিশের পদস্থ অফিসার প্রতাপ সিং জানান, “রাত ১০ টা বেজে ৫০ মিনিট নাগাদ ফোনে জানানো হয় একটি শিশুকে খুন করা হয়েছে। এরপর তারা এসে শ্মশানের পুরোহিত সহ তার তিন সঙ্গী সেলিম, কুলদীপ ও লক্ষ্মী নারায়ণকে গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে শিশুদের যৌন হেনস্থা বিরোধী আইন এবং তফশিলী জাতি-উপজাতিদের বিরুদ্ধে অপরাধ দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া ফরেনসিকের জন্য ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পুরো বিষয়টির  উচ্চ পর্যায়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


প্রসঙ্গত, গত ৩০ শে জুলাই পুলিশ আধিকারিকরা একটি হাসপাতাল থেকে খবর পান যে, মেডিকেল পরীক্ষায় জানা যায় ১৬ বছরের এক কিশোরী ধর্ষণের পর সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েছে। কিশোরীর বয়ান রেকর্ড করা হয়। তাতে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগে তার বাড়ির কাছে এক যুবকের সাথে আলাপ হয়। এরপর ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে তারপর থেকেই যুবকটি এড়িয়ে যেতে থাকে এমনকি নিজের ফোন নম্বরও দেয়নি।

এসআই প্রিয়ঙ্কা সাইনি অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর রুজু করে তদন্ত শুরু করেন। এসএইচও (দাবরি) এস এস সান্ধু একটি টিম গড়ে অভিযুক্তকে ফেসবুকে খোঁজ শুরু করেন। ১০০ জনের ওপর প্রোফাইল দেখানোর পর নির্যাতিতা তাদের একজনকে চিহ্নিত করে। প্রিয়ঙ্কা সাইনি নতুন একটি প্রোফাইল খুলে যুবকটিকে বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠালে সে তা গ্রহণ করে। কিন্তু ফোন নম্বর শেয়ার করতে বললে রাজি হয়নি। প্রিয়ঙ্কা সাইনিকে দেখা করতে বলে জানায় যে, দেখা হলে বিস্তারিত তথ্য দেবে। তবে প্রিয়ঙ্কা সাইনি শেষ পর্যন্ত কোনোভাবে ফোন নম্বর বের করে নেন। ৩১ শে জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় প্রথমে প্রিয়ঙ্কা সাইনিকে দশরথ পুরী মেট্রো স্টেশনে আসতে বলে মুহূর্তে মুহূর্তে লোকেশন পরিবর্তন করলে শেষমেশ অভিযুক্তকে শ্রীমাতা মন্দির মহবীর এনক্লেভ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
May 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031