নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বর্ধমানঃ পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার পানাগড় রেলপাড়া ট্যাঙ্কিতলা এলাকায় একতলা বাড়ির মেঝে থেকে উদ্ধার ৭৫ বছর বয়সী বনশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক বৃদ্ধার পচন ধরা দেহ। আবার ওই ঘরেরই বিছানার একদিকে শীর্ণকায় অবস্থায় ৪৫ বছর বয়সী ছেলেকে শুয়ে থাকতে দেখা গেল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় আড়াই দশক আগে প্রাক্তন রেলকর্মী তারকনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ট্যাঙ্কিতলায় বাড়ি তৈরী করে স্ত্রী বনশ্রী ও ছেলে-মেয়েদের নিয়ে থাকতে শুরু করেন। কিন্তু কয়েক বছর পরেই শারীরিক অসুস্থতায় মেয়ের মৃত্যু হয়। এছাড়া চার বছর আগে তারকনাথবাবুরও মৃত্যু হয়।
এরপর থেকে বনশ্রী দেবী ছেলেকে নিয়ে একা থাকতেন। তারকনাথবাবুর পেনশনের টাকায় সংসার চলত। ছেলে কোনো কাজ কর্তেন না। মানসিক সমস্যা ছিল। মাঝেমধ্যে বনশ্রী দেবী হাটে-বাজারে যেতেন। বাড়ির বাইরে খুব একটা বেরোতেন না। তারা পড়শিদের সাথে মেলামেশাও করতেন না। বাড়িতে লোকজনের আসা-যাওয়া ছিল না।
তবে কিছু দিন থেকে ওই বাড়ি থেকে কাউকেই বের হতে দেখা যায়নি। আলো জ্বলতে দেখা যায়নি। কিন্তু এদিন সকালবেলা থেকে ওই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ পেতেই বাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকিও করেও কোনো আওয়াজ না পাওয়ায় কাঁকসা থানায় খবর দেওয়া হয়।
পুলিশ এসে দরজা ভেঙে মৃতদেহ উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলেই জানা যাবে যে কত দিন আগে মৃত্যু হয়েছে। তারপর মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে পানাগড় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কিছু বলতে পারেননি।
যদিও ওই ব্যক্তি মায়ের দেহ আগলে ছিলেন কি না তা নিয়েও ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, সম্ভবত তিন দিন থেকে ওই ব্যক্তি কিছু খাননি। তদন্তের পাশাপাশি ওই পরিবারের আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ চালানো হচ্ছে।