এখনো এলাকা জলমগ্ন থাকায় ঘর ছাড়লেন স্থানীয়রা

Share

পিঙ্কি পালঃ দক্ষিণ চব্বিশ পরগণাঃ দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সাগর ব্লকের ঘোড়ামারা দ্বীপের তিন দিক হুগলি, বটতলা ও মুড়িগঙ্গা নদীতে ঘিরে আছে। আর অন্য দিকে বঙ্গোপসাগর আছে। ২০১০ সাল থেকেই ভাঙনের জন্য খাসিমারা, বাগপাড়া, বৈষ্ণবপাড়া এবং লক্ষ্মীনারায়ণপুরে একাংশ জলের তলায় তলিয়ে গিয়েছে।

আয়লা, বুলবুল, আমফানের পর এবার ঘূর্ণিঝড় যশ ও পূর্ণিমার ভরা কোটালের জলোচ্ছ্বাসের জেরে সমগ্র দ্বীপটাই প্লাবিত হয়ে যায়। কিন্তু এখনো ছ’দিন কেটে গেলেও মন্দিরতলা, খাসিমারা, চুনপুরি, বাগপাড়া, হাটখোলা সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে। জল না নামায় থাকা খাওয়ার চিন্তায় ঘুম উড়েছে তমিনা বিবি, সনাতন জানাদের মতো দ্বীপের বহু বাসিন্দাদের। অগত্যা নিরুপায় হয়েই একে একে ভিটেমাটি ছাড়তে শুরু করেছেন।


গতকাল ঘোড়ামারা দ্বীপের মন্দিরতলা ঘাটে থাকা দু’টি নৌকা করে প্রায় ৫০ জন বাসিন্দা নিজেদের বাসভূমি ছেড়ে অজানা ভবিষ্যতের দিকে রওনা দিয়েছেন।


ঘোড়ামারার চুনপুরির বাসিন্দা সর্বহারা তমিনা বিবি জানান, ”বুঝিনি নদীর জল এসে ভিটেমাটি কেড়ে আমাদের নিঃস্ব করে দেবে। এখনো উঠোনে জল জমে রয়েছে। আসবাবপত্র ভাসছে। স্বামী বাইরে কাজে আছে। সাগরে আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছি। জানি না কবে ফিরতে পারবো”।


তমিনার মতোই ২৫ বছর বয়সী সনাতন জানা ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। সনাতনদের ঘোড়ামারার কয়েক বিঘা জমিতে পানের বরজ রয়েছে। মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করে বাবার সঙ্গে পুরোদমে চাষের কাজে নেমে পড়েছিলেন। ভেবেছিলেন যা পান উঠবে তা বিক্রি করেই বাজারের ঋণ শোধ করে স্বাচ্ছন্দ্যে সংসার চালাবেন কিন্তু ঘূর্ণিঝড় যশ সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিলো। ছল ছল চোখে জানালেন, ”এমনিতেই ভাঙন দ্বীপটাকে গিলে চলেছে। এর উপর জল বেড়ে যাওয়ায় ঘর-বাড়ি, পানবরজ যা ছিল সব শেষ হয়ে গেলো”।

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930