মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে সমাপ্ত হলো দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের পূর্ণাহুতি

Share

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মেদিনীপুরঃ পূর্ব মেদিনীপুরের  দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। শুরু হয়েছে মহাযজ্ঞ। সেখানে উপস্থিত রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। কলিঙ্গ শৈলীতে তৈরি জগন্নাথদেবের মন্দিরটি পুরীর মন্দিরের আদলে তৈরি। বুধবার, অক্ষয়তৃতীয়ার দিন উদ্বোধন। সেই উপলক্ষে সোমবার থেকে মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের সৈকতনগরীতে।মঙ্গলবার দুপুরে তিনি যোগ দেন মহাযজ্ঞে।

পূর্ণাহুতির পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘‘সমস্ত ধর্ম-বর্ণের মানুষ এসেছেন এখানে। প্রত্যেকেই আমাদের অতিথি। ধর্ম কখনও মুখে প্রচার করে হয় না। ধর্মে হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার জিনিস। মা-মাটি-মানুষ ভাল থাকলে আমি ভাল থাকব। তাই সকলের হয়ে প্রার্থনা করছি।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, বুধবার বেলা আড়াইটে থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে। ৩টের সময় দ্বার উদ্‌ঘাটন রয়েছে। তার পর ৫ মিনিটের জন্য মন্দির খুলে দেওয়া হবে। তার পরে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।


মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রয়েছেন তৃণমূলের একঝাঁক নেতা, সাংসদ, বিধায়ক। রয়েছেন তৃণমূলের তারকা সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে জুন মালিয়া, বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। মূল যজ্ঞমঞ্চের অদূরে মঞ্চে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ভাই বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। টলিউডের নামী প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা, গায়ক নচিকেতা চক্রবর্তী, অভিনেতা ও চিত্রপরিচালক অরিন্দম শীল, দেবলীনা কুমার, শিল্পপতি রুদ্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখকে দেখা গিয়েছে মন্দিরের কাছে তৈরি মঞ্চে। মমতা বলেন ‘‘বুধবার অনুষ্ঠান আছে। সে জন্য অদিতি (মুন্সি, গায়িকা, বিধায়ক) এসেছে। ডোনা গাঙ্গুলি, জিৎ গাঙ্গুলি এসেছে। দেব, রচনা, দেবলীনা, সকলেই এসেছে।’’


যজ্ঞের সময় মুখ্যমন্ত্রীর পাশে রয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা, মমতার ভ্রাতৃবধূ লতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলে পূর্ণাহুতির পরে পুরোহিতদের হাতে শরবতের গেলাস তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্দির উদ্বোধনের বহু আগে থেকেই তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্ব জেলা সভাপতিদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, বড় এলইডি স্ক্রিনে সমস্ত জেলার প্রতিটি প্রান্তে জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন দেখানোর বন্দোবস্ত করতে হবে।


জেলাভিত্তিক সেই কাজ শুরুও করেছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতিরা। কিন্তু সাম্প্রতিক নির্দেশে বলা হয়েছে, শুধু বড় এলইডি স্ক্রিন লাগিয়ে জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠান সম্প্রচার করলেই হবে না, সেখানে যাতে এলাকার জনগণ যোগ দিতে পারে, সেই ব্যবস্থাও করতে হবে। সঙ্গে আয়োজন করতে হবে জগন্নাথদেবের ভোগ বিতরণেরও। প্রয়োজনে দিঘার মন্দির উদ্বোধনের পরে সাধারণ মানুষকে যাতে একসঙ্গে বসিয়ে ভোগ খাওয়ানো যায়, তেমন ব্যবস্থাও রাখতে হবে।

বস্তুত, ২০১৮ সালে পূর্ব মেদিনীপুর সফরে গিয়ে দিঘায় জগন্নাথ মন্দির তৈরির ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কোভিড পর্বে মন্দির তৈরির কাজ বন্ধ ছিল। তবে পরে দ্রুত গতিতে তৈরি হয়েছে ‘সম্পূরা’ আদলে মন্দির। রাজস্থান থেকে অন্তত ৮০০ কারিগর আনা হয়েছিল। কারিগরদের অনেকেই আবার অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মূল মন্দিরে থাকছে ভোগমণ্ডপ, নাটমন্দির, জগমোহন এবং গর্ভগৃহ। আর নাটমন্দিরটি দাঁড়িয়ে আছে ১৬টি স্তম্ভের উপরে। সিংহাসনে থাকবে জগন্নাথ, বলরাম এব‌ং সুভদ্রার মূর্তি।

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
September 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930