চয়ন রায়ঃ কলকাতাঃ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন। রাজভবন সূত্রে খবর, হেয়ারস্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে রাজভবনের তরফে। সম্প্রতি, কল্যাণ দাবি করেছিলেন রাজভবনের অন্দরে নাকি বোমা-বন্দুক মজুত রয়েছে। এরপরই গতকাল অর্থাৎ সোমবার বম্ব স্কোয়াড ডাকে রাজভবন। সিআইএসএফ ও রাজ্যপুলিশকে দিয়ে খোঁজানো আগ্নেয়াস্ত্র। তারপর আজ মঙ্গলবার রাজভবনের তরফে তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের থানায়।

রাজভবন সূত্রে খবর, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহকে উস্কে দেওয়া অর্থাৎ বিএনএস এর ১৫১, ১৫২ নম্বর ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। একই সঙ্গে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনার জন্য ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় ১৯৭ নং ধারা নিয়ে আনা হয়েছে। পাশাপাশি, সামাজিক সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ, বিএনএস-এর ১৯৬-এর ১ (এ) ধারা আনা হয়েছে। পাশাপাশি জনমতের আতঙ্ক সৃষ্টি অর্থাৎ বিএনএস-এর ১৫৩ ১ (বি), ১৫৩ ১( সি), ১৫৩ (২) আনা হয়েছে।

শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ বলেন, “একটা চিঠি দেওয়া মানেই এফআইআর নয়। আইন আমি সিভি আনন্দ বোসের থেকে বেশি বুঝি। ধারা ছাড়ুন, সিভি আনন্দ বোসকে ছাড়ব নাকি আমি? ও যা ইচ্ছা করুক। ওই রকম হাজারটা সিভি আনন্দ বোস দেখছি। ফালতু লোক, থার্ড গ্রেডেড লোক। আবার বলছি থার্ড গ্রেডেড লোক। উস্কানিমূলক কথা উনি বলেছেন। যত ধারা বলল সব ওর ক্ষেত্রে অ্যাপ্লাই করা উচিত।”
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
শনিবার চঁচুড়ায় ‘তৃণমূলের লিগ্যাল সেলের’ একটি সভায় উপস্থিত হন সাংসদ কল্য়াণ বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেখান থেকে একের পর এক ‘বোমা’ ফাটাতে থাকেন। প্রথমে আক্রমণ শানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। তারপর রাজ্যপালের ‘ব্যালটে ভোট’ দেওয়ার বক্ত্যবের প্রেক্ষিতে মন্তব্য করে বলেন, “রাজ্যপালকে আগে বলুন যেন উনি বিজেপির ক্রিমিনালদের রাজভবনে ঠাঁই দেওয়া বন্ধ করেন। রাজভবনে বসে ক্রিমিনালদের ডাকছেন। সবার হাতে একটা বন্দুক দিচ্ছেন, বোমা দিচ্ছেন। দিয়ে বলছেন, তৃণমূলকে মেরে এসো। আগে এগুলো বন্ধ করতে হবে।” এখানে উল্লেখ্য, বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলির উদ্দেশে বার্তা দিয়েছিলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান সিভি আনন্দ বোস। তিনি বলেছিলেন,”বাংলায় ব্যালটে ভোট হওয়া উচিত, বুলেটে নয়।”

এরপর রাজভবনের তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, সোমবার ভোর ৫টা থেকে ১০০ জনের মধ্যে সীমিত সংখ্যক সাংসদ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের এবং সাংবাদিকদের জন্য রাজভবন খুলে দেওয়া হবে। তাঁরা সরেজমিনে এসে দেখতে পারবেন, আদৌ কোনও অস্ত্র বা গোলাবারুদ রাখা রয়েছে কি না। আর তারপর যদি কল্যাণের দাবি ভুয়ো প্রমাণিত হয়,তখন তাঁকে বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। এরপর গতকাল দেখা যায় বোমা খুঁজতে ডেকে পাঠানো হয় বম্ব স্কোয়াডকে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
গতকালের তল্লাশি অভিযানের পর সিভি আনন্দ বোস বলেন, “রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কিছু বলা, অভিযোগ তোলার প্রবণতা রয়েছে বাংলায়। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কিছু বললে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মনে করা হয়। কিন্তু, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ভুয়ো অভিযোগ করলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।” কল্যাণকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, “অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”










