নিজস্ব সংবাদদাতাঃ নয়া দিল্লিঃ আজ রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে চলা নীতি আয়োগের বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই বেরিয়ে গেলেন। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সাত জন মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় বাজেটে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে বৈঠক বয়কট করলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাইসিনায় উপস্থিত হয়েছিলেন।
কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক ছেড়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, ‘‘আমি বলেছি আপনাদের (কেন্দ্রীয় সরকার) কোনো রাজ্য সরকারের প্রতি বৈষম্য করা উচিত নয়। আমি কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে মাত্র পাঁচ মিনিট কথা বলতে দেওয়া হয়েছিল। মাইক বন্ধ করে আমাকে অপমান করা হয়েছে।’’ এছাড়া বলেন, ‘‘অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু কুড়ি মিনিট বলার সুযোগ পেয়েছেন। গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ন্ত, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ও ছত্রিশগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুদেও সাইও কথা বলায় যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছেন।
আর বিরোধী দল থেকে আমিই একমাত্র অংশগ্রহণ করেছিলাম। আরো কিছু বলতে চেয়েছিলাম। তবুও আমাকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। এই বঞ্চনার প্রতিবাদে আমি বৈঠক ছেড়ে চলে এসেছি। এরপরে নীতি আয়োগের আর কোনো বৈঠকে থাকব না।’’ অতীতে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী একাধিক বার লোকসভায় মাইক বন্ধের অভিযোগ তুলেছেন। এবার অঙ্গরাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকেও নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মাইক বন্ধ করে বিরোধীদের কণ্ঠরোধের অভিযোগ উঠলো।
উল্লেখ্য, গতকাল দিল্লি পৌঁছানোর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘বাজেটে যেভাবে বিরোধী রাজ্যগুলিকে বঞ্চনা করা হয়েছে, সেটা মানতে পারছি না। এক দিকে ইকনমিক ব্লকেড, পলিটিক্যাল ব্লকেড, এর সাথে বাংলা সহ বিভিন্ন রাজ্যকে টুকরো টুকরো করে দেওয়ার যে পরিকল্পনা, তার চরম নিন্দা করছি। মন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বাংলা ভাগের কথা বলছেন! বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পারছি, ওদের দলের অনেক নেতাও বিহার-ঝাড়খণ্ড-আসাম-বাংলাকে ভাগ করা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিবৃতি দিচ্ছেন। এর কড়া নিন্দা করছি। বিহার, ঝাড়খণ্ড, আসাম এবং বাংলাকে ভাগ করা মানে গোটা দেশকে ভাগ করা। আমরা একে সমর্থন করি না।’’
পাশাপাশি নীতি আয়োগের প্রসঙ্গ টেনে জানিয়েছেন, ‘‘বাংলা ভাগের দাবীর প্রতিবাদ জানাতেই নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেব। কিছুক্ষণ বৈঠকে থাকব। কিছু বলতে দিলে বলব। আর না হলে প্রতিবাদ করব। বাংলার হয়ে কথা বলব।’’ এদিকে, কংগ্রেস শাসিত কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া, তেলঙ্গানার রেবন্ত রেড্ডি, হিমাচল প্রদেশের সুখবিন্দর সিংহ সুখু সহ কেরলের মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা পিনারাই বিজয়ন, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন ও আম আদমি পার্টির নেতা তথা পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান কেন্দ্রীয় বাজেটে বঞ্চনায় প্রতিবাদে নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট করেন। অন্যদিকে, বিজেপির সহযোগী জেডিইউর প্রধান তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও উপস্থিত ছিলেন না।