অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ স্বাধীনতার আগে থেকে দেশের প্রাচীনতম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গোদরেজ যাত্রা শুরু করেছে। বহু বছর থেকে এই কোম্পানী মানুষের মনে বিশ্বাসের জায়গা করে নিয়েছে। ১৮৯৭ সালে উকিল থেকে ব্যবসায়ী হওয়া আর্দেশির গোদরেজের হাত ধরে এই কোম্পানী শুরু হয়েছিল। পরে আর্দেশিরের ভাই পিরোজশা ও তাঁর সন্তান-সন্ততিরা এই গোষ্ঠীর দায়িত্ব নেন। কিন্তু অবশেষে ১২৭ বছরের গোদরেজ পরিবার ভেঙে গেছে।
উল্লেখ্য, গোদরেজের মোট সম্পত্তির মূল্য ২.৩৪ লক্ষ কোটি টাকা। আপাতত দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেল গোদরেজ পরিবার। গোদরেজ গ্রুপের সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একদিকে আদি গোদরেজ (৮২) এবং ভাই নাদির গোদরেজ (৭৩) (পিরোজশার পুত্র বুর্জর গোদরেজের সন্তান) ও অন্যদিকে, খুড়তুতো ভাই জামশেদ গোদরেজ (৭৫) এবং স্মিতা গোদরেজ কৃষ্ণা (৭৪) (কনিষ্ঠ পুত্র নাভাল গোদরেজের সন্তান)।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, আদি গোদরেজ ও ভাই নাদির গোদরেজের হাতে বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানী যেমন- গোদরেজ ইন্ডাস্ট্রিজ, গোদরেজ প্রপার্টিজ, গোদরেজ কনজিউমার প্রোডাক্টস, গোদরেজ অ্যাগ্রোভেট এবং অ্যাসটেক লাইফ সায়েন্সেস থাকছে। আর জামশেদ গোদরেজ ও স্মিতা গোদরেজ গোদরেজ গ্রুপের নন-লিস্টেড কোম্পানিগুলির দায়িত্ব পেয়েছেন। এছাড়া গোদরেজের ল্যান্ড ব্যাঙ্কের দায়িত্ব সামলাবেন। প্রসঙ্গত, ল্যান্ড ব্যাঙ্কের মধ্যে মুম্বইতে ৩ হাজার ৪০০ একরের জমিও রয়েছে।
নাদির গোদরেজ এই গোদরেজ ইন্ডাস্ট্রিজ গ্রুপের চেয়ারপার্সন হবে। আর জামশেদ গোদরেজ গোদরেজ এন্টারপ্রাইজ গ্রুপের চেয়ারপার্সন এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর হচ্ছেন। স্মিতা গোদরেজের মেয়ে নয়ারিকা হোলকার গোদরেজ (৪২) এন্টারপ্রাইজেস গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক হবেন। যার মধ্যে গোদরেজ অ্যান্ড ব্যাস ও সহযোগী কোম্পানীগুলি রয়েছে।
এই ভাগ বাঁটোয়ারা চূড়ান্ত করতে একদিকে যেমন আদি গোদরেজ এবং নাদির গোদরেজ গোদরেজ অ্যান্ড ব্যাসের বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেছেন। তেমনই অপরদিকে, জামশেদ গোদরেজও জিসিপিএল ও গোদরেজ প্রপার্টিজের বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেছেন। জামশেদ গোদরেজ এই প্রসঙ্গে জানান, “১৮৯৭ সাল থেকে গোদরেজ জাতি গঠনের উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করেছে। পারিবারিক চুক্তি কার্যকর হওয়ায় জটিলতা কমবে। গ্রাহকরা উপকৃত হবেন। আমরা আমাদের মূল শক্তিতে আরো বেশী করে ফোকাস করতে পারব”।