অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ এসএসসির (স্কুল সার্ভিস কমিশন) ২৬ হাজার চাকরী বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তা প্রধান বিচারপতি সূর্যকান্ত ও জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ পুনর্বিবেচনার আর্জি গ্রহণ করেননি। আদালত জানিয়েছে, ‘‘এই বিষয় পূর্বে যে রায় ছিল, তাই বহাল থাকবে। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও কোনো রকম হস্তক্ষেপ করা হবে না।’’ সুপ্রিম কোর্ট এসএসসির ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল দুর্নীতির অভিযোগ বাতিল করে দিয়েছিল। ফলে ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরী চলে যায়।

আদালত জানিয়েছিল, ‘‘কমিশনকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার আয়োজন করতে হবে। আর চলতি বছরের মধ্যে তা শেষ করতে হবে। যারা ‘দাগি অযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত, তারা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুযোগ পাবেন না। তাদের বেতনও ফেরত দিতে হবে। বাকিরা ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ দেবেন।’’ সেই অনুযায়ী কমিশন নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে। নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হয়। নতুন তালিকাও প্রকাশ করা হয়।

কিন্তু চাকরীপ্রার্থীদের একাংশ এই বিষয়ে ফের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে ২৬ হাজার চাকরী বাতিলের রায় পুনরায় বিবেচনা এবং নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করার আবেদন জানান। তাদের বক্তব্য ছিল, ‘‘নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনেককে বঞ্চিত করা হয়েছে। অনেক যোগ্য সুযোগই পাননি।’’ তবে সুপ্রিম কোর্ট এই আর্জি গ্রহণ করতেই চায়নি। প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘এটা ঠিক যে, কোনো প্রক্রিয়া খারিজ হলে ভালো পড়ুয়ারাও ক্ষতিগ্রস্ত হন। কিন্তু যারা ভালো তারা আবার নিযুক্ত হয়ে যেতে পারবেন।’’
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
এসএসসির নিয়োগপ্রক্রিয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা হয়েছিল। গত ২৬ শে নভেম্বর কলকাতা হাইকোর্টে সেই সমস্ত মামলা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ‘‘এসএসসি এক জন ‘দাগি’ চাকরীপ্রার্থীকেও চাকরী দিতে পারবে না।’’ অভিযোগ ছিল, ‘‘এসএসসি নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ‘দাগি’ প্রতিবন্ধী চাকরীপ্রার্থীদেরও সুযোগ দিচ্ছে।’’ কমিশন আদালতের রায় পড়ে দাবী করে, ‘‘তাদের মনে হয়েছে, ‘দাগি’ প্রতিবন্ধী চাকরীপ্রার্থীদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। নতুন করে চাকরীও পেতে পারেন।’’

কলকাতা হাইকোর্ট তা আগেই খারিজ করে দিয়েছিল। পরে সেই মামলা আবার সুপ্রিম কোর্টে যায়। আদালত বলে দেয়, ‘‘কোনো ‘দাগি’ চাকরীপ্রার্থীকে চাকরী দেওয়া যাবে না। এসএসসির অন্য সমস্ত বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে যত মামলা বিচারাধীন রয়েছে, তা হাইকোর্ট শুনবে। সুপ্রিম কোর্ট আপাতত এই সংক্রান্ত কোনো মামলা শুনবে না। যদি হাইকোর্টের সিদ্ধান্তে কোনো সমস্যা তৈরী হয়, আবার তা নিয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানানো যাবে।’’ এদিন ফের চাকরীপ্রার্থীদের আর্জি খারিজ করে দেওয়া হয়।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here









