নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বর্ধমানঃ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্না হওয়া সাপ সহ খিচুড়ি খেয়ে ফেলায় অসুস্থ হয়ে গেল বহু শিশু। যে অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্র থেকে শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের পুষ্টির জন্য রান্না করা খাবার দেওয়া হয়। সেই খাবারের মধ্যে যে সাপ থাকবে তা ভাবা একেবারে কল্পনারও অতীত।
পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের বাগকালাপাহাড় গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ঘটা এই ঘটনায় আতঙ্কিত সকলে। পাড়াতল দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম বাগকালাপাহাড়ে শিশু এবং গর্ভবতী মিলিয়ে ওই গ্রামের ১৩৬ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে পুষ্টিদায়ক খাবার পাওয়ার জন্য ৫৪ জনের নাম নথিভুক্ত রয়েছে।
যারা মূলত কাঠালডাঙা, খোরদোপলাশি ও বাগকালাপাহাড় গ্রামের বাসিন্দা। অন্যান্য দিনের মতো গতকালও ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশু এবং গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খিচুড়ি রান্না হয়। বেলা ১০ টার মধ্যে রান্না শেষ হলে শিশু ও গর্ভবতীরা সেই খিচুড়ি নিয়ে বাড়িতে চলে যান।
ঘরে বসে খিচুড়ি খেতে গিয়ে এক শিশুর অভিভাবকের চক্ষু চড়ক গাছ। দেখা যায়, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে দেওয়া গরম খিচুড়ির মধ্যে একটি মরা সাপের বাচ্চা। যা দেখেই ওই শিশু এবং তার পরিবারের লোকজন আঁতকে ওঠেন। আর ছুটে গিয়ে গ্রামের অন্য শিশুদের পরিবার ও গর্ভবতীদের বিষয়টি জানিয়ে খিচুড়ি খেতে বারণ করেন।
ততক্ষণে যে ছয় জন শিশু খিচুড়ি খেয়ে ফেলেছিল ওই শিশুদের অভিভাবকরা ঘটনার কথা জেনে উদ্বিগ্ন হয়ে দুপুরবেলাই স্থানীয় জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা শিশুদের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখে বেশ কিছু সময় পর্যবেক্ষণে রাখেন। এরপর ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
ব্লকের বিডিও এবং সিডিপিও জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে শিশুদের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। এদিকে এতবড়ো ঘটনা ঘটলেও জামালপুর ব্লকের সিডিপিও সুশোভন রায় মুখে কার্যত কুলুপ এঁটে রয়েছেন।
বিডিও শুভঙ্কর মজুমদারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে বলেন,“শিশুদের বড়ো কোনো বিপদ হয়নি এটাই রক্ষে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সবাইকে শো-কজ নোটিস ধরানো হয়েছে। শো-কজের উত্তর সন্তোষজনক না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” যদিও এমন ঘটনা ঘটল কিভাবে তা নিয়ে ব্লক প্রশাসন ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে।
এদিকে অতি সম্প্রতি জলপাইগুড়ি সদর হাস্পাতালের শিশু বিভাগে খাবারে কেঁচো পড়ার ঘটনার প্রায় দুই দিনের মাথায় আবার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্না হওয়া খাবারে মরা সাপের বাচ্চা থাকার ঘটনাটি একেবারে যেন অমনোযোগীতার পরিচয়।