অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ সাধারণত পুজোর মাসখানেক আগে থেকেই কুমোরটুলিতে তরুণ-তরুণী ও চিত্রগ্রাহকদের আনাগোনা বাড়ে। কিন্তু আর জি কর কাণ্ডের জেরে গত মাসের শুরুর দিক থেকে কুমোরটুলির চেনা ছন্দের তাল কাটতে শুরু করেছিল। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যখন আর জি কর কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ চরমে উঠেছিল তখন পুজোর আগের কুমোরটুলির চেনা ছবিটা প্রায় দেখাই যায়নি। প্রতিমা তৈরীর কাজ পুরোদমে চললেও ভিড় প্রায় ছিল না বললেই চলে। আর এখন দুর্গাপুজোর মাত্র দু’সপ্তাহ বাকি। তবু এই ছবির খুব একটা পরিবর্তন আসেনি।
বিশ্বকর্মা পুজোর পরে কুমোরটুলিতে আসা তরুণ-তরুণীদের সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও তা অন্যান্য বছরের তুলনায় নগণ্য। মৃৎশিল্পী মিন্টু পাল জানান, ‘‘আর জি করের নৃশংস ঘটনা সকলকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। তাই ঘটনার পরে বিচারের দাবীতে প্রথম তিন সপ্তাহ কলকাতা সহ শহরতলির বিভিন্ন জায়গায় লাগাতার মিছিল এবং বিক্ষোভ হয়েছে। ওই সময় কুমোরটুলিতে কলেজ পড়ুয়াদের আনাগোনা তেমন চোখে পড়েনি। বিশ্বকর্মা পুজোর পরে তরুণ-তরুণীরা পটুয়াপাড়ার দিকে মুখ ফেরালেও সংখ্যাটা এখনো বেশ কম।’’
কুমোরটুলির মৃৎশিল্প সংস্কৃতি সমিতির যুগ্ম সম্পাদক রণজিৎ সরকার বলেন, ‘‘পুজোর দু’সপ্তাহ আগে কুমোরটুলিতে এত কম ভিড় আগে কবে দেখেছি, মনে পড়ছে না। মৃৎশিল্পীদের স্টুডিয়োয় ছবি তোলার জন্য নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে কুপন কাটতে হয়। এই টাকা এলাকার মানুষদের স্বাস্থ্য পরিষেবায় খরচ করা হয়। রবিবার ছবি তোলার ভিড়টাও সাধারণত বেশী থাকে। গত বছর প্রতি রবিবার কুপন কেটে গড়ে দশ থেকে বারো হাজার টাকা করে সংগ্রহ করা হয়েছিল। গত রবিবার ওই টাকার পরিমাণ মাত্র চার হাজার ছিল।’’
এছাড়া এও বলেছেন, ‘‘আর জি করের ঘটনার আগেই অধিকাংশ মৃৎশিল্পীর কাছে বায়না হয়ে গিয়েছিল। ফলে প্রতিমার বায়নার উপরে তেমন প্রভাব পড়েনি। আর বায়না বাতিল হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেনি। তবে সাজ শিল্পীদের বিক্রিবাটার উপরে কোপ পড়েছে। আর জি কর কাণ্ডের পরে ছোটো ও মাঝারী পুজোর উদ্যোক্তারা সাজের বায়না কমিয়ে দিয়েছেন। অনেকে আবার বাতিল করেছেন। অর্থাৎ আর জি কর কাণ্ডের পরে উদ্যোক্তারা জৌলুসহীন পুজোর দিকে ঝুঁকে পড়ায় এতে সাজ শিল্পের ব্যবসায়ীরা মার খাচ্ছেন।’’