নিজস্ব সংবাদদাতাঃ নয়া দিল্লিঃ নয়া ইতিহাস গড়লো ভারত। রাশিয়া, আমেরিকা ও চীনের মতোই বিশ্বের বৃহত্তর দেশের পাশেই ভারত নিজের নাম জুড়লো। আজ ইসরোর দু’টি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে স্বয়ংক্রিয় ভাবে সংযুক্ত হওয়ায় ভারত মহাকাশ গবেষণা সংস্থার নতুন ভাবনায় সফল হয়েছে। এই সাফল্যের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইসরোকে অভিনন্দন জানিয়ে লেখেন, ‘ইসরোয় আমাদের বিজ্ঞানী সহ এই কাজের সাথে জড়িত প্রত্যেককে অনেক অভিনন্দন। স্যাটেলাইটগুলির স্পেস ডকিং সফল হয়েছে। আগামী বছরগুলিতে ভারত মহাকাশে আরো অভিযান চালাবে। আর স্পেস ডকিং আগামী দিনে মহাকাশ বিজ্ঞানে ভারতের লক্ষ্যপূরণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।’
মূলত, মহাকাশে স্টেশন তৈরীতে ভারতের পথ আরো প্রশস্ত হয়েছে। গত ৩০ শে ডিসেম্বর ইসরো স্পেস ডকিংয়ের জন্য অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের লঞ্চিং প্যাড থেকে পিএসএলভি-সি৬০ রকেট উৎক্ষেপণ করে। ওই রকেটের প্রধান পেলোড হিসাবেই স্পেডেক্স ১ এবং স্পেডেক্স ২ কে পাঠানো হয়েছিল। এছাড়া চব্বিশ সেকেন্ডারি পেলোডও পাঠানো হয়েছিল। গত ১২ ই জানুয়ারী ইসরোর বিজ্ঞানীরা প্রথমে ১৫ মিটার ও পরে ৩ মিটার অবধি কাছাকাছি আনার পর প্রযুক্তিগত সমস্যার জন্য পরীক্ষাটি স্থগিত হয়ে যায়।
তবে এদিন একই বিন্দুতে আনার মিশন বা স্পেস ডকিং প্রক্রিয়ায় ভারত সাফল্য অর্জন করেছে। এদিন ইসরোর তরফে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানানো হয় যে, ‘স্পেস ডকিং প্রক্রিয়া সফল হলো। এটা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। প্রথমে আমরা ১৫ মিটার এবং তিন মিটার পর্যন্ত পরীক্ষামূলক প্রচেষ্টা করেছিলাম। তারপর দু’টি উপগ্রহের পরস্পরকে স্পর্শের প্রক্রিয়াটি নির্ভুল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। প্রত্যাহারও সম্পূর্ণ। বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসাবে ভারত স্পেস ডকিংয়ে সাফল্য পেল। সমগ্র টিমকে অভিনন্দন।’

- Sponsored -
উল্লেখ্য, দু’টি ভিন্ন কৃত্রিম উপগ্রহকে একই দূরত্বে একই গতিবেগে একই বিন্দুতে আনার প্রক্রিয়াকেই স্পেস ডকিং পদ্ধতি বলে। এটি মহাকাশ গবেষণার একটি অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া। মহাকাশে স্যাটেলাইটগুলি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্টেশন স্থাপন করতেই স্পেস ডকিং প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়। আর এবার সেই লক্ষ্যেই ভারত প্রথম দফা সাফল্য অর্জন করেছে। এর আগে রাশিয়া, আমেরিকা ও চীন স্পেস ডকিংয়ে সফলতা অর্জন করেছিল।
পিএসএলভি-সি৬০ মিশনের প্রধান জয়কুমার জানান, ‘‘২০৩৫ সালের মধ্যে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নিজস্ব আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন স্থাপন করতে বদ্ধপরিকর। যাকে ভারতীয় অন্তরীক্ষ স্টেশন বলা হবে। তাছাড়া ২০২৮ সালের মধ্যে শুক্রে যাওয়ার কাজও পরিকল্পনায় রয়েছে। এসবের আগেও অবশ্য একটি মহাকাশ অভিযান হবে। ফের চাঁদ থেকে নমুনা সংগ্রহের কাজে ঝাঁপানো হবে।’’ ইসরো চাইছে ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে মানুষ পাঠাতে। আমেরিকা ছাড়া যে কাজ এখনো অবধি আর কেউ করতে পারেনি।