রায়া দাসঃ কলকাতাঃ আরজি কর কাণ্ডে নিম্ন আদালত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়ার পরেই সঞ্জয়ের আইনজীবী সেঁজুতি চক্রবর্তী তাকে বেকসুর খালাস করার জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন বলে জানালেন। সেঁজুতি চক্রবর্তী জানান, ‘‘কোনো অভিযুক্ত নিম্ন আদালতে দোষী প্রমাণিত হলেও উচ্চ আদালতে আবেদন করার অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার থেকেই উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছেন। আর এই আবেদন নিয়ে পরিকল্পনা করার জন্য কিছু সময় লাগবে বলেও জানিয়েছেন।’’
আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনে সঞ্জয়কে শনিবার দোষী সাব্যস্ত করেছিল শিয়ালদহ কোর্ট। সোমবার তাঁর শাস্তি শুনিয়েছেন বিচারক অনির্বাণ দাস। তার পরেই সঞ্জয়ের আইনজীবী সেঁজুতি বলেন, ‘‘উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হব। যে কোনও অভিযুক্ত, যিনি দোষী প্রমাণিত হচ্ছেন, তাঁর অধিকার থাকে উচ্চ আদালতে আবেদন করার। এই আবেদনের পরিকল্পনা করার জন্য সময় নেব।’’ তার পরেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, সঞ্জয়কে ‘নির্যাতিত’ বলে মনে করছেন তাঁর আইনজীবীরা। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সঞ্জয়কে নির্যাতিত বলে মনে করছি। হাই কোর্টে যাবই। এটা আমাদের অধিকার। তাঁকে খালাস করানোর জন্যই যাচ্ছি।’’
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
সঞ্জয়ের হয়ে নিম্ন আদালতে সওয়াল করে ‘সাবমিশন’ দিয়েছিলেন তাঁর আইনজীবীরা। সেঁজুতি জানিয়েছেন, ঠিক কোন পরিস্থিতিতে দোষীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, সাবমিশনে তা বিশদে জানানো হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে তিনটি পরিস্থিতির কথা তুলে ধরা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘এক, যেখানে বিকল্প পথ বন্ধ হয়ে গেছে, শুধুমাত্র সেই ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। অর্থাৎ কারাদণ্ড হওয়ার পরেও কাউকে যদি মনে করা হয়, তিনি বিপজ্জনক, তখন তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
দুই, কোর্টকে দেখাতে হবে যে সেই ব্যক্তি সংশোধনের ঊর্ধ্বে অর্থাৎ তাঁর আর সংশোধন হওয়া সম্ভব নয়। কেন এ রকম বলা হচ্ছে, তা-ও দেখাতে হবে কোর্টকে। তিন, বিচার করার পরেও কিছু বিষয় পড়ে থাকে। প্রমাণ হওয়ার পরেও কিছু ফাঁক থাকে। ‘অ্যাবসলিউট ট্রুথ’ বলে কিছু হয় না। এই অবস্থায় কাউকে মেরে ফেলা হবে কি না, তা দেখা হয়।’’ সেঁজুতির দাবি, সঞ্জয়কে দোষী প্রমাণিত করা নিয়ে এখনও কিছু ‘সংশয়’ রয়েছে, যা স্পষ্ট হয়নি। সেগুলি হাই কোর্টে বলবেন বলেই জানিয়েছেন সেঁজুতি।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
এ ক্ষেত্রে তিনি সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের কথা তুলে এ-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, বিরলের মধ্যে বিরলতম হলেও সংশোধনের একটা সুযোগ থাকে এক জন মানুষের। সেটা সকলের অধিকার। এখন জেলকেও সংশোধনাগার বলা হয়। মানুষকে সংশোধিত হওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য জেলে পাঠানো হয়। সেই সুযোগ তাঁর মক্কেলেরও পাওয়া উচিত। আর সে জন্য তাঁরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছেন।