নিজস্ব সংবাদদাতাঃ হাওড়াঃ হাওড়ায় পুলিশ ও পুরসভার চোখের সামনেই অবৈধ পার্কিংয়ের কারবার চলছে। বেআইনী পার্কিংকে ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় সিন্ডিকেট গজিয়ে উঠেছে। ফলে এই কারবারে যুক্ত কারবারীরা কাটমানি হিসেবে মোটা টাকা নিচ্ছেন। তাই তিন বছরে পার্কিং বাবদ পুর কোষাগারে একটি টাকাও জমা পড়েনি। এই খাতে রাজস্বের প্রায় তিন কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
হাওড়ায় ২০১৮ সালের পর থেকে নির্বাচিত পুর বোর্ড না থাকায় কাজ প্রায় হয় না বললেই চলে। আর অন্যদিকে একটি-দু’টি দপ্তর ছাড়া অধিকাংশ দপ্তরের রাজস্ব আদায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো পার্কিং দপ্তর। আগে এই দপ্তর বছরে প্রায় এক কোটি টাকা আয় করত। কিন্তু বর্তমানে তা কমতে কমতে আয়ের পরিমাণ কার্যত শূন্য।
হাওড়ার মতো ঘিঞ্জি শহরে বৈধ পার্কিংয়ের জায়গা খুব কম হলেও ১৩৯ টি অনুষ্ঠান বাড়ি সংলগ্ন পার্কিং এবং শহরের আরো ৩৮টি পার্কিং লট পুরসভার নিজস্ব। ২০১৭ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পুরসভার এই সমস্ত পার্কিং থেকে বছরে প্রায় এক কোটি টাকা আয় হত।
কিন্তু ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সাল অবধি পার্কিং থেকে একটি টাকাও আয় না হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ প্রায় তিন কোটি টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্কিং-ফি আদায়ের জন্য দরপত্র ডেকে বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

- Sponsored -
তবে গত কয়েক বছরে বার বার দরপত্র চাওয়া হলেও কোনো সিন্ডিকেটের স্থানীয় তোলাবাজদের সাথে ঝামেলায় জড়ানোর ভয়ে কোনো সংস্থা তাতে সাড়া দেয়নি। এর জেরে পার্কিং-ফি আদায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর পুরসভার নিজস্ব পরিকাঠামো না থাকায় এখন স্থানীয় তোলাবাজেরাই পার্কিং থেকে অবাধে টাকা তুলছে।
ইতিমধ্যেই হাওড়া বাস স্ট্যান্ড, স্টেশন চত্বর সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে মঙ্গলাহাট চলাকালীন, রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিন দিন বঙ্গবাসী মোড়ের কাছে অবৈধ পার্কিং লটগুলিতে সিন্ডিকেটের রাজত্ব চলে। যার ফলে ট্যাক্সি ও মালবাহী গাড়ির ভিড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। বঙ্কিম সেতুও পার্কিংয়ের জায়গা হয়ে যায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ যে, এক শ্রেণীর ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীর সাথে স্থানীয় সিন্ডিকেটের বোঝাপড়াতেই অবাধে এই পার্কিং ব্যবসা চলছে। এ প্রসঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশ বলেন, ‘‘পুরসভারই পার্কিং লটগুলি দেখাশোনার দায়িত্ব। কিন্তু অন্য যে সব জায়গায় অবৈধ পার্কিং হয়েছ সেগুলি খতিয়ে দেখে আমরা নো পার্কিং জোনের নির্দেশিকা জারি করেছি।’’