সরানো হচ্ছে রাজ্যের পুলিশ কমিশনার সহ ডিসি নর্থকে

Share

চয়ন রায়ঃ কলকাতাঃ অবশেষে সোমবার আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে বৈঠক করেন। প্রায় দু’ঘণ্টার বেশী সময় ধরে এই বৈঠক চলে। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমেই জানান, “এখন বর্ষাকাল। ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া বাড়বে। তাই ডাক্তারদের কাছে আমাদের অনুরোধ আপনারা কাজে ফিরে যান।” আমি বলেছি, “কর্মবিরতি তুলুন। আপনাদের চারটে দাবীর মধ্যে তিনটে মেনে নিয়েছি। এছাড়া সিসিটিভি, লাইট, রেস্টরুম, ওয়াসরুম তৈরী করার ব্যাপারে একশো কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া সিকিউরিটির বিষয় দেখছি।

হাসপাতালের সেফ্টি সিকিওরিটি ও পরিকাঠামো গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। একটি কমিটি হয়েছে, যেখানে ডিজি, সিপি, মুখ্যসচীব, হোম সেক্রেটারী থাকছেন। তিনটে দাবী মেনে নিয়েছি। এটা নিজে থেকেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেহেতু নর্থ ডিসি আগেই পৌঁছেছিলেন। ১৪ তারিখ ঘটনা ঘটেছিল। ওরা অভিযোগ করেছিল সেই মতো নর্থের ডিসিকেও সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে সেটা কালকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর পুলিশ আমাদের ফোর্স। তারা সারাক্ষণ কাজ করেন। তাদের দিকটাও আমাদের দেখা উচিত। সব কথা তো মিনিটসে লেখা যায় না। তবে ওরা চেয়েছে বলেই বিনীত গোয়েল ওদের কথা মেনে নিয়েছেন। তাই বিনীত গোয়েল সিপি থাকবেন না।


বিনীত গোয়েল ওদের কাছে আগেই নাকি স্বীকার করেছিলেন যে উনি পদত্যাগ করতে চান। কারণ, তার প্রতি চিকিৎসকরা আস্থা রাখতে পারছেন না। বিনীত গোয়েল মিটিংয়ে বলেছেন ‘তারও পরিবার-পরিজন আছে।’  এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নিই আগামীকাল চারটের পর কলকাতা পুলিশে বদল আনব। বিনীত নতুন সিপিকে দায়িত্বভার দেবেন। যতক্ষণ পর্যন্ত কোর্ট কেস শেষ না হচ্ছে। বিনীত গোয়েল যেখানে কাজ করতে চেয়েছেন সেখানেই দেওয়া হয়েছে। আর কিছু পুলিশে রদবদল হবে। সেটা চিফ সেক্রেটারী জানাবেন।

ওদের চারটে ডিমান্ড ছিল। একটা ডিএমই, ডিএইচএস, হেলথের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি। আমরা বুঝিয়েছি একসাথে পুরো ঘর খালি করে দেওয়া যায় তাহলে অ্যাডমিনিস্ট্রেশন চলবে কী করে? আমারা ওদের সিদ্ধান্ত মতো ডিএমই, ডিএইচএস-কে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওরা জাস্ট নতুন হয়েছেন। তবে ছাত্রছাত্রীরা চাইছেন। তাই ওদের দাবি মেনে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।


আমাদের যতদূর সম্ভব করার করব। দায়বদ্ধতা সকলের থাকে।আর আমি জুনিয়র ডাক্তারদের বলব অনেক মানুষ মারা গিয়েছে। অনেক কষ্ট হচ্ছে। চিকিৎসা পাচ্ছে না। অনেক রোগী আটকে আছে। মানুষ মনে করে আপনারাই ভগবান। সুতরাং আমি কাজে ফিরতে অনুরোধ করব। সমস্যা থাকলে সমাধান করতে হয়। বাংলার মানুষের দিকে তাকিয়ে আমাদের দিক থেকে যা যা করার ছিল আমরা চেষ্টা করেছি। এটা নিয়ে অপপ্রচার দয়া করে করবেন না। আমি মনে করি মিটিংটা পজিটিভ হয়েছে। না হলে ওরাই বা সই করবেন কেন? আমরাই বা সই করব কেন? ওরা ছোটো বলে ওদের দাবী একটু বেশী মেনেছি।”

পাশাপাশি প্রশাসনিক আধিকারিকদের উদ্দেশ্য বলেন, “মঙ্গলবার অনেক জল ঢুকবে। খানাকুলে পঁয়ত্রিশ জন আটকে। এত রাতেরবেলা উদ্ধার করব কী করে। সকালবেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের দলকে পাঠাব। সিএস নিজে মনিটারিং করছেন। আমি নিজেও ডিএম এর সাথে ভার্চুয়াল মিটিং করেছি। হাওড়া, হুগলী, বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান, উত্তর চব্বিশ পরগণা এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা অনেকটাই ক্ষতির মুখে। আমি নিজে আদি গঙ্গার সামনে থাকি। এতটা জল আসতে দেখিনি। আমরা সিঁড়ি বানিয়ে দিয়েছিলাম। চোদ্দ-পনেরোটা সিঁড়ি ছিল। আর একটা দুটো বাকি আছে। ওদের বারণ সত্বেও যদি জল ছেড়ে দেয় তাহলে বন্যা আটকানো যাবে না।”


Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
September 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930