নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মণিপুরঃ এবার মণিপুরের ককচিং জেলার সুগনুতে নতুন করে সংঘর্ষ ছড়িয়েছে। সেখানে কুকি জনগোষ্ঠীর জঙ্গিরা স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক কাংগুজাম রণজিতের বাড়ি সহ প্রায় দুশোটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। ফলে কয়েক হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। আর মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।
মায়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে আসা সশস্ত্র কুকি জঙ্গিরা নাপেট, তাংজেং, পোম্বিখক সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালাচ্ছে। কেন্দ্রীয় আধাসেনা অসম রাইফেলস ও মণিপুর রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী জঙ্গিদের আটকাতে চেষ্টা করলেও গুলির জেরে সরে গেছে।
মণিপুরি মেইতেই জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ মঞ্চ কোরকমি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে অভিযোগ জানায়, ‘‘কেন্দ্রের সাথে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি সইয়ের পরেও কুকি জঙ্গিরা তা অমান্য করে হিংসা ছড়াচ্ছে।’’ উল্লেখ্য যে, মণিপুরের প্রায় নব্বই শতাংশ পাহাড়ি জমিতেই কুকি, নাগা এবং বিভিন্ন জনজাতি গোষ্ঠীর বাস।
বাকি অংশ অর্থাৎ ইম্ফল উপত্যকায় মূলত রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইরা থাকেন। অভিযোগ উঠেছে, মায়ানমার থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের অরণ্যে কুকিরা নতুন জনবসতি গড়ে তুলছেন। ফলে আগামী দিনে মেইতেইরা জমি বেদখল হওয়ার আশঙ্কা করছেন। এমনকি অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে মায়ানমারের মাদক চক্রগুলিকে কাঁচামাল জোগানেরও অভিযোগ রয়েছে।
এতে বিবিধ জনজাতির মধ্যে জনসংখ্যাগত ভারসাম্য বদল ও সম্পদ বণ্টনের জেরে অগ্নিগর্ভ হয়ে রয়েছে। গত ৩ রা মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুরের’ (এটিএসইউএম) কর্মসূচী ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল। মণিপুর হাইকোর্ট মেইতেইদের তফশিলী জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল।
এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয়। আদি বাসিন্দা মেইতেই জনগোষ্ঠীর সাথে কুকি, জো এবং কয়েকটি জনজাতি সম্প্রদায়ের সংঘর্ষের জেরে সরকারী তথ্য অনুযায়ী প্রায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ৪০০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এর সাথে সাথে গোষ্ঠীহিংসার জেরে ২৫ হাজারের বেশী মানুষ গৃহহীন হয়েছেন।