অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ এবার ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করল। গতকাল সিজিও কমপ্লেক্সে রাতভর টানা জিজ্ঞাসাবাদ করার সময়ে বয়ানে অসঙ্গতি ও জেরায় অসহযোগীতার অভিযোগ এনে রাতেরবেলাই পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ইডি সূত্রে খবর, তিনি নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে যে নথি জমা দিয়েছিলেন, সেখানে একাধিক গোলমাল থাকায় এই জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মামলায় ইডি যে চার্জশিট দিয়েছিল তাতেও মানিক ভট্টাচার্যের নাম ছিল। চার্জশিটে অভিযোগ আনা হয়েছিল যে, মানিক ভট্টাচার্য চাকরীপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চাকরী দিয়েছিলেন যা পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
এছাড়া ইডির হাতে তাঁর এবং প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর মোবাইল বার্তার আদানপ্রদানের প্রমাণ রয়েছে। চার্জশিটেও এর উল্লেখ রয়েছে। চার্জশিট জমা দেওয়ার পর মানিক ভট্টাচার্যকে তলব না করা সত্ত্বেও ২১ শে সেপ্টেম্বর রাতেরবেলা নিজেই ইডি আধিকারিকদের কাছে গিয়ে বিভিন্ন নথি জমা দিয়ে আসেন। আর ওই নথির ভিত্তিতেই তদন্ত চলছিল।
মানিক ভট্টাচার্যের গ্রেফতার প্রসঙ্গে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, ‘‘মানিক সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে তদন্ত এড়াতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা করেছেন। তদন্তে সহযোগীতা না করায় ইডি হেফাজতে নিয়ে ভালো করেছে। হেফাজতে নিয়েই তদন্ত করা দরকার। আশা করা যায়, এরপর আরো অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।’’
এর আগে হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে (সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন) এই মামলায় তদন্তভার দিয়েছিল। মানিক ভট্টাচার্য টেটকাণ্ডে হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন। প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় শুনানি শেষ হলেও সুপ্রিম কোর্ট রায় ঘোষণা স্থগিত রেখেছিল।
আর জানিয়ে দিয়েছিল, প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় রায় ঘোষণা না হওয়া অবধি মানিক ভট্টাচার্যকে কোনো ভাবেই গ্রেফতার করা যাবে না। তবে হাইকোর্ট টেট মামলায় সিবিআইকে তদন্ত করার যে নির্দেশ দিয়েছিল, তাতেও দেশের শীর্ষ আদালত স্থগিতাদেশ দেয়নি। যদিও এর মধ্যেই মানিক ভট্টাচার্যকে ইডি গ্রেফতার করেছে।