মিনাক্ষী দাসঃ আগামীকালই পৌষ সংক্রান্তি। অতএব বাঙালীর ঘরে ঘরে নানান স্বাদের পিঠে-পুলির তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে এবারের পৌষে আপনার পিঠের তালিকায় মুগপুলিও রাখতে পারেন। কিন্তু মুগডাল ও চালের গুঁড়ো দিয়ে বানানো মুগপুলি বা মুগ সামলি খেতে যতটা ভালো, করা ততটাই পরিশ্রমের। পুলিগুলো হয় খুব শক্ত হয়ে যায়, না হলে পুলির ভিতরে রস প্রবেশ করে না। যদিও সময় নিয়ে ধৈর্য সহকারে সঠিক পদ্ধতি জানলে আপনিও বাংলার হারিয়ে যাওয়া এই বিশেষ পদটি বাড়িতে বানিয়ে ফেলতে পারেন।
উপকরণঃ ১ কাপ মুগ ডাল, ১ কাপ পাটালি গুড়, ১ কাপ নারকেল কোরা, আধ কাপ চালের গুঁড়ো, ১ টেবিল চামচ ঘি, আধ কাপ চিনি, ১ কাপ সাদা তেল এবং ৪ টেবিল চামচ জল।
প্রণালীঃ ১) প্রথমে মুগ ডাল শুকনো কড়াইতে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। আর ভেজে নেওয়া ডাল জল দিয়ে ধুয়ে সামান্য নুন দিয়ে সেদ্ধ বসাতে হবে।
২) ডাল সেদ্ধ হতে হতে কোরানো নারকেল ও পাটালি গুড় কড়াইতে একসাথে পাক দিতে হবে। আর নাড়তে নাড়তে যখন গুড় এবং নারকেলের পুরটা একটু চটচটে হয়ে আসবে, তখন গ্যাস বন্ধ করে দিতে হবে।
৩) এদিকে, ডাল সেদ্ধ হয়ে গেলে জল একেবারে শুকিয়ে এলে তার মধ্যে চালের গুঁড়ো দিয়ে দিতে হবে। এরপর সেদ্ধ মুগডাল ও চালের গুঁড়ো ভালো করে মিশিয়ে একটি মণ্ড তৈরী করে ঢাকা দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিয়ে দু’হাতের তালুতে সামান্য ঘি মাখিয়ে তাতে চাল-ডালের মণ্ডটা ভালো করে মাখতে হবে। মণ্ড একেবারে মসৃণ করে মাখা হলে সেখান থেকে ছোটো ছোটো লেচি কেটে নিতে হবে।
৪) তারপর দু’হাতের তালুর মাঝে একটি করে লেচি নিয়ে প্রথমে ভালো করে গোল পাকিয়ে নিয়ে তাতে আঙুল দিয়ে চেপে চেপে বাটির মতো গড়ে নিয়ে নারকেলের পুরটা ওই বাটির মধ্যে ভরে বাটির মুখ বন্ধ করে পুলির আকারে গড়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে পুলির গায়ে যেন কোনো ফাটল না থাকে।
৫) এরপর কড়াইতে সাদা তেল হালকা গরম হলে তার মধ্যে পুলিগুলো ছেড়ে দিয়ে পুলিগুলো গাঢ় খয়েরী বা লালচে করে ভেজে নিতে হবে। পুলি ভাজতে ভাজতে অন্য একটি পাত্রে চিনি আর জল দিয়ে সিরা বানিয়ে নিতে হবে। সিরা যাতে খুব পাতলা না হয় তাই জল এবং চিনির পরিমাণ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
৬) চিনি গলে গেলে ভেজে রাখা পুলিগুলো সিরায় দিয়ে হালকা নাড়াচাড়া করে প্লেটে তুলে রাখতে হবে। আর পুলির গায়ে চিনির সিরা শুকিয়ে সাদা রঙের প্রলেপ পড়লেই সামলি তৈরী। ইচ্ছে হলে এই পুলি বা সামলিগুলো কাচের বয়ামে ভরে অনেক দিন অবধি রেখে দিতে পারেন।