এবার প্রাথমিকের পরীক্ষায় আসতে চলেছে বড়োসড়ো বদল

Share

রায়া দাসঃ কলকাতাঃ এবার প্রাথমিকেও সিমেস্টার পদ্ধতি চালু হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ বছরে দু’বার পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এই পদ্ধতিতেই পড়ুয়াদের পরীক্ষা ও মূল্যায়ন করা হবে। পরীক্ষা পদ্ধতির পাশাপাশি পাঠ্যক্রমেও (সিলেবাস) পরিবর্তন আনা হচ্ছে। আজ সাংবাদিক বৈঠক করে প্রাথমিক পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল নতুন পদ্ধতির কথা ঘোষণা করেন। নতুন পদ্ধতির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্রেডিট বেসড সিমেস্টার সিস্টেম’।

২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে এই পদ্ধতি চালু হচ্ছে। পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, ‘‘আগে বছরে একবার পরীক্ষা নেওয়া হত। সেই পরীক্ষার ফলাফলের উপর বিশ্লেষণ করে পড়ুয়াদের পরবর্তী শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করার ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু এবার থেকে একশো নম্বরের পরীক্ষা দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। জানুয়ারী থেকে জুন এবং জুলাই থেকে ডিসেম্বর। প্রথম সিমেস্টার চল্লিশ নম্বরে ও পরের পরীক্ষা ষাট নম্বরে হবে। অর্থাৎ গোটা বছরকে এই দু’ভাগে ভাগ করে পরীক্ষা নেওয়া হবে।


চল্লিশ নম্বরের পরীক্ষা কোনো লিখিত আকারে হবে না। এর মধ্যে কুড়ি নম্বর পড়ুয়াদের উপস্থিতি, ক্লাসে আচরণ ইত্যাদি বিষয় মূল্যায়নের উপর থাকবে। আর বাকি কুড়ি নম্বর বিভিন্ন প্রজেক্টের ভিত্তিতে থাকবে। আর দ্বিতীয় সিমেস্টারের ষাট নম্বর পুরোটাই লিখিত থাকবে। তবে এবার থেকে বিদ্যালয়ের হাতে প্রশ্নপত্র তৈরী করার দায়িত্ব থাকছে না। প্রাথমিকের প্রশ্নপত্র পর্ষদই তৈরী করবে। গোটা রাজ্যে একই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে। কিন্তু খাতা সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই দেখবেন। পাশাপাশি পড়ুয়াদের জন্য ‘ক্রেডিট স্কোর’ও থাকছে।


প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর জন্য প্রত্যেক বছর মোট ৩৭৬ ঘণ্টা ক্লাসের সময় ঠিক করা হয়েছে। যার উপর এই ‘ক্রেডিট স্কোর’ দেওয়া হবে। সর্বোচ্চ ‘ক্রেডিট স্কোর’ ১৩.৫ স্থির করা হয়েছে। তৃতীয় শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে বছরে ৪৬০ ঘণ্টা ক্লাস নেওয়া হবে। এই তিন শ্রেণির জন্য সর্বোচ্চ ‘ক্রেডিট স্কোর’ ১৬.৫ স্থির করা হয়েছে। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে যখন প্রতিযোগীতায় যাবে, তখন এই ক্রেডিট পয়েন্ট গ্রহণযোগ্যতা পাবে। মূলত, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে পুরোনো পাঠ্যক্রমে পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাথমিকের পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আসবে। ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে শিক্ষা দপ্তরের অনুমতি পাওয়া গিয়েছে।’’


নতুন ব্যবস্থা নিয়ে প্রাথমিক পর্ষদ সভাপতি জানান, ‘‘আমরা সরকারের সাহায্যে এই ধরণের সাহসী পদক্ষেপ করতে পেরেছি। ছোটো থেকে এই ধরণের মূল্যায়ন পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে গেলে পড়ুয়াদের ভবিষ্যতে কোনও অসুবিধা হবে না।’’ অন্যদিকে, প্রাথমিক পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকার এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা চাই বুনিয়াদি শিক্ষা আরো শক্তিশালী হোক। সর্বভারতীয় স্তরের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই নতুন পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও দ্রুত এই ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হবে।’’

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
October 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031