কদম গাছের ওপরেই সাধনস্থল মাচান বাবার

Share

স্নেহাশীষ মুখার্জিঃ নদীয়াঃ কোনো মঠ-মন্দির নয় কদম গাছের ওপরে মাচা করে সেখানেই সাধনা করছেন নবদ্বীপের মাচান বাবা। এইভাবে দশ বছর কেটে গেছে। মাচান বাবার গাছেই ঘরবাড়ি আর গাছের উপর ছোট্ট মাচাটাই তার মন্দির। দিনরাত সেখানেই থাকেন। নবদ্বীপের রানীচরে চলে এলেই দেখা যাবে এই দৃশ্য।

https://www.youtube.com/watch?v=yACk27nt7Ts


আবার পাশাপাশি কদম গাছের তলায় খাবারের অপেক্ষায় মাচার নীচে অসংখ্য কুকুরকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এই মাচান বাবার ডেড়ায় খাবারের খোঁজে পাখি ও হনুমানও ঢুকে পড়ে।

https://www.youtube.com/watch?v=DI3XYl0l6ZM


নবদ্বীপ শহরের রানীচড়ে ভাগীরথীর ধারে এক কদম গাছের ওপরে ১০ ফুট উঁচু মাচার ওপরেই মাচান বাবার সাধন ক্ষেত্র। স্থানীয় লোকজন তাকে শ্যামল দাস নামে জানলেও দীর্ঘ ১০ বছরেরও বেশী সময় মাচায় বসে সাধনা করছেন বলে মাচান বাবা বলেই নবদ্বীপে পরিচিতি লাভ করেছেন।
মাচান বাবার বাড়ি খুব কাছেই বেশী দূরে নয়। তিনি একসময় একটা মন্দিরেও থাকতেন। মন্দিরে থাকাকালীন মাচান বাবার মনে একাকী ভগবান সাধনা করার চিন্তা জাগে।


তৎকালীন সময়ে প্রায় ১০ বছর আগে মাচান বাবা রানী চরের গঙ্গার ধারে তিনটি গাছও লাগান। কিছুদিন মন্দিরে থাকার পর সেখান থেকে রানীর চড়ার গঙ্গার ঘাটের কাছে একটা ঘর তৈরী করেন। কিন্তু বর্ষায় গঙ্গার জল বাড়লে ঘরে জল ঢুকতে থাকে। ঘর বসবাসের অযোগ্য হয়ে যায়। তখন এলাকার লোকেরা সাহায্য করে বাঁশ ও দড়ি জোগাড় করে দিলে তিনি নিজেই নিজের হাতে পোঁতা তিনটি কদম গাছের মধ্যে একটি কদম গাছের ডালে বাঁশ, কাঠ এবং ত্রিপল দিয়ে একটা দশ ফুটের মাচা তৈরি করে ঈশ্বর সাধনা শুরু করেন। একটা মই ঝুলিয়ে দিয়েছেন যে মই থেকে ওঠা-নামা করা যায়।

https://www.youtube.com/watch?v=eoz1WWwQUqI

আগে ভোর বেলায় মাচান বাবা নামতেন। নেমে প্রাতঃক্রিয়া করে গঙ্গা স্নান করে ওপরে সাধনা করতে উঠে যেতেন। পাশেই মন্দির থেকে খাবার দিয়ে যেত মাচান বাবা সেই খাবারই খেতেন। আবার অনেকে গঙ্গা স্নান করতে আসার সময় এই সাধুকে খাবার দিয়ে যেত। চাল, আলু যা জুটতো মাচার ওপরে বসেই উনুনে ফুটিয়ে নিয়ে খেতেন আর না হলে বিস্কুট মুড়ি শসা দিয়ে সেবা করতেন।

কিন্তু এখন লকডাউনের কারণে সবাই এদিকে আসে না। তাই এখন মন্দির থেকে খাবারও দেয় না। সেই কারণে এখন মাঝে মাঝে মাচান বাবাকে ভিক্ষায় বেরোতে হয়। দশ দিন পর একদিন ভিক্ষায় বেরোন যা পান তাই মাচায় বসে খান। তবে মাচান বাবা একা খান না। খাবার লোভে কয়েকটা কুকুর আছে যারা গাছের নীচে বসে থাকেন তাদেরও দেন। এমনকি কয়েকটা পাখি ও হনুমান তাদেরকেও নিরাশ করেন না।

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
September 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930