নিজস্ব সংবাদদাতাঃ আসানসোলঃ আসানসোলের কাঁকসায় স্থানীয়দের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা ভেবেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরী হয়েছিল। বছর খানেক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারী ভাবে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও করেছিলেন। কিন্তু আজও ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তালা খোলা হলো না। আসানসোল পুর কর্তৃপক্ষ পরিষেবা শুরু করতে পারলেন না।

জানা যাচ্ছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছানোর পাকা রাস্তা নেই। একটি মাঠের পাশে মেঠো পথ দিয়ে সেখানে যাওয়া যায়। তবে আশেপাশে জঙ্গল গজিয়ে উঠেছে। চারিদিকে আবর্জনার স্তূপে ভর্তি। মেঝে থেকে দেওয়াল সব জায়গায় ধুলোর পুরু আস্তরণ পড়েছে। কাচের জানালা-দরজা সব ভেঙে পড়ছে। সন্ধ্যা নামলেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে মদের আসর বসে পড়ে। সামান্য অসুখ হলেও এলাকাবাসী দূরবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে বাধ্য হচ্ছে। এই অবস্থায় তারা দ্রুত স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালুর দাবীতে সরব হয়েছেন। যদিও পুর কর্তৃপক্ষও শীঘ্র ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

ন্যাশনাল আরবান হেলথ মিশনের অন্তর্গত আসানসোল পুরসভা এলাকায় প্রায় এগারোটি সু-স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা হয়েছিল। কেন্দ্রের আর্থিক অনুমোদনে তা গড়ে তোলার কথা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী আসানসোল পুরসভার ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের ডেইডি এলাকায় একটি তৈরী হয়। ভবণ নির্মাণ থেকে পরিকাঠামোগত যাবতীয় উন্নয়নও করা হয়। কিন্তু এলাকাবাসীরা আক্ষেপের সুরে জানান, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তালা খোলা হয়নি। চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া তো অনেক দূরের বিষয়!’’
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
স্থানীয় বাসিন্দা প্রীতম মাজি বলেন, ‘‘পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রায় এক হাজার মানুষের বাস। সামান্য শরীর খারাপ হলেও তিন কিলোমিটার পথ উজিয়ে কুমারডিহা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে হয়। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরীর সময় মনে হয়েছিল, দুর্দশা ঘুচলো। কিন্তু আশা পূরণ হলো না।’’ অন্য আরেক জন বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘‘অন্ধকার নামলেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাকা চাতালে মদের আসর বসে। ঢিল মেরে দরজা ও জানলার কাচ ভাঙা হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের আনাগোনা বাড়ছে। আমরা সন্ত্রস্ত।’’

আসানসোল পুরসভা সূত্রে খবর, সপ্তাহে তিন দিন এখানে চিকিৎসকের বসার কথা। স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকেই ওষুধ দেওয়া হবে। দু’জন স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন চিকিৎসককে সাহায্য করার জন্য। প্রসূতি ও সদ্যজাতকে বিভিন্ন ধরনের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হবে। বস্তুত আসানসোল জেলা হাসপাতালের চাপ কমাতে এবং স্থানীয়দের হাতের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে এই ব্যবস্থা। আসানসোল পুরসভার মেয়র পারিষদ দিব্যেন্দু ভগতের মন্তব্য, ‘কিছু সমস্যার জন্য এটি খুলতে দেরি হচ্ছে। দ্রুত চালু করা হবে।’ যদিও নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিকের দাবি, চিকিৎসকের অভাব রয়েছে বলেই পরিষেবা চালু করা যাচ্ছে না!
Sponsored Ads
Display Your Ads Here









