নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বর্ধমানঃ দু’বছর আগে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর ও স্নাতকের তিনটি সিমেস্টারে পরীক্ষা হয়েছে। ফলাফলও সময়ে বেরিয়েছে। অথচ এখনো পড়ুয়ারা মার্কশিট হাতে পায়নি। এছাড়া অ্যাডমিট কার্ড ছাড়াই পিএইচডির কোর্সওয়ার্ক বা এমফিলের প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা নেওয়ার মতো অভিযোগ উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায় অভিযোগ জানান, “তিন বছরের জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাডমিট কার্ড এবং মার্কশিট ছাপার জন্য একটি সংস্থাকে ২১ কোটি টাকা বরাত দিয়েছে। তা এত দিন বিশ্ববিদ্যালয় নিজে কয়েক লক্ষ টাকায় করত।’’
উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহা জানান, ‘‘গ্লোবাল টেন্ডারের মাধ্যমে একটি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে। তারা কাজ করে বিল দিলে তা মেটানো হবে। এখনো অবধি আমরা কোনো টাকা দিইনি। ২১ কোটি টাকার প্রশ্ন কোথা থেকে এসেছে জানা নেই।’’ কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ামক দপ্তর মার্কশিট ও অ্যাডমিট কার্ড বিলিতে গাফিলতি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
এদিন এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিলের (ইসি) বৈঠকে ওই দপ্তরের চার জন আধিকারিককে ভর্ৎসনাও করা হয়। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, “পরীক্ষা নিয়ামক দপ্তর কিছু গাফিলতি এবং সমন্বয়ের অভাবের বিষয়ে তদন্ত সহ উপাচার্য আশিস পাণিগ্রাহীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি সংস্থা ই-মার্কশিট তৈরী করে দেওয়ার পরে তা নির্দিষ্ট সময়ে অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছিল। তবে এখনো অবধি ছাপানো মার্কশিট দেওয়া যায়নি। ইসি চলাকালীন পরীক্ষা নিয়ামক দপ্তরের চার জন আধিকারিককে ডেকে জানতে চাওয়া হয় স্নাতকোত্তরের চতুর্থ সিমেস্টার চলছে, এখনো আগের তিন সিমেস্টারের মার্কশিট দেওয়া যায়নি কেন?
দপ্তরের এক জন কর্তা বলেছেন, “মার্কশিট পড়ে রয়েছে। বিভাগীয় প্রধানেরা তা নিয়ে গিয়ে পরীক্ষার্থীদের দেবেন বলে মনে করেছিলেন। যা শুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তারা ক্ষুব্ধ হন। অ্যাডমিট কার্ড ছাড়া পরীক্ষা নেওয়া হলো কিভাবে সেই প্রশ্নও ওঠে। এরপর আজ থেকে পরীক্ষা নিয়ামক দপ্তর বাংলা বিভাগের পিএইডির কোর্সওয়ার্ক পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’
এরইমধ্যে কয়েকটি সূত্রের অভিযোগ যে, কোর্সওয়ার্কে এক দিনও হাজির না থাকা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন পড়ুয়াকে পিএইডির রেজিস্ট্রেশন করতে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে দাবী করেছে।