চোখের জলে ফিরতে হলো ভারতকে

Share

চয়ন রায়ঃ কলকাতাঃ ১২ বছর পর এবারও বিশ্বকাপ জয় হল না। অবশেষে আমদাবাদে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারত হেরে গেল। এবার ভারত টানা দশটি ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল। চলতি বছর বিশ্বকাপে ভারত এই ফাইনাল ম্যাচেই হারলো। প্রথমে ব্যাটিংয়ে ২৪০ রান করা ভারতের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া ২৪১ রান করে চার উইকেটে জয়লাভ করলো।

আজ টস জিতে কামিন্স আগে বল করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন অধিনায়ক রিকি পন্টিং ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় বলেন, “টস জিতে বল করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ বোঝা গেল না। এই পিচে আগে ব্যাট করে নিলেই বোধ হয় সুবিধা হত।” কিন্তু এই ম্যাচে কামিন্স এবং অস্ট্রেলিয়ার বাকি বোলারেরা রিকি পন্টিংকে ভুল প্রমাণিত করলেন।


এবারের বিশ্বকাপে রোহিত শর্মা যেভাবে খেলছিলেন, ঠিক সেভাবেই এদিন দ্রুত রান তুলতে শুরু করেন। তবে বড়ো শট নিতে গিয়েই তিনটি ছক্কা ও চারটি চার মেরে ৪৭ রানে আউট হলেন। আর রোহিত শর্মার আউট হতেই ভারত প্রথম ধাক্কা খেলো। এরপর পর পর চারটি চার মারা বিরাট কোহলি আউট হতেই ভারত বড়োসড়ো ধাক্কা খেল।


ফাইনালে সেই অস্ট্রেলিয়া। যারা টানা আটটি ম্যাচ জিতেছে। বিশ্বকাপের বহু ম্যাচ ভারত একপেশে ভাবে জিতলেও বিশ্বকাপের ফাইনালে যে তা হবে না, সেটাই জানাই ছিল। পাঁচ বারের বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলিয়া গ্রুপ পর্বে হারলেও ফাইনাল অন্য ধরনের ম্যাচ। প্রথম ওভার থেকেই অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডিং সেটাই বুঝিয়ে দিচ্ছিল।


ডেভিড ওয়ার্নার হয়তো তাঁর শেষ এক দিনের ম্যাচ খেলে ফেললেন। ৩৭ বছরের সেই ক্রিকেটার যে ভাবে ফিল্ডিং করলেন তা বাকিদের উদ্বুদ্ধ করতে বাধ্য। এদিকে ট্রেভিস হেড রোহিত শর্মার ক্যাচ নেওয়ার সময় আকাশের দিকে তাকিয়ে বাউন্ডারির দিকে দৌড়ে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ নিলেন। অন্য ফিল্ডারেরাও চার হতে দিচ্ছিলেন না। অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডারেরা ভারতের অন্তত ৪০ রান আটকে দেন।

বিরাট এবং রাহুল অবস্থা বুঝে সিঙ্গলস নিতে শুরু করলেন। কোনও বোলারকে মেডেন নিতে দেননি তাঁরা। ওভারে অন্তত চারটি করে সিঙ্গলস নিয়ে স্কোরবোর্ডকে সচল রাখলেন বিরাটেরা। ভারতীয় সমর্থকেরা আফসোস করছিলেন শ্রেয়স আয়ারের উইকেট হারানো নিয়ে। মাত্র চার রান করে আউট হয়ে যান তিনি। শ্রেয়স থাকলে আরও কিছু রান বেশি হতে পারত বলে মনে করা হচ্ছে।

কিন্তু রোহিত আউট হওয়ার চার বলের মধ্যেই আউট হন শ্রেয়স। ভারতের বড় ধাক্কা ছিল সেটা। বিরাট এবং রাহুলের কাছে উপায় ছিল না বড় শট খেলার ঝুঁকি নেওয়ার। তাই বিরাট ৬৩ বলে করলেন ৫৪ রান আর রাহুল ১০৭ বল খেলে করলেন ৬৬ রান। কামিন্সের বল বিরাটের ব্যাটে লেগে উইকেট ভেঙে দেয়। আর স্টেডিয়ামের ১ লক্ষের বেশি দর্শক হতাশায় চুপ করে যায়।

বিরাট আউট হতে রবীন্দ্র জাডেজা ব্যাট করতে নামেন। রাহুলের সঙ্গে ইনিংস গড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু ২২ বল খেললেও ৯ রানের বেশি করতে পারেননি জাডেজা। ভারতের আশা ছিল সূর্যকুমার যাদবের উপর। আইপিএলে ঝোড়ো ইনিংস খেলা সূর্য যদি শেষ বেলায় দ্রুত ৫০ রানও করে দিতে পারতেন, তাহলে বোলারদের হাতে আরও কিছু রান বেশি থাকত।

কিন্তু সূর্যকুমার বড় শট খেলতে যেতেই নিজের উইকেট দিয়ে এলেন। বিশ্বকাপের বাকি ম্যাচে ভারতের উপরের দিকে ব্যাটারেরা এত রান করেছেন যে, সূর্যকুমারের রান না পাওয়া সমস্যায় ফেলেনি। ২৮ বলে ১৮ রান করে যাওয়া সূর্য ভারতকে রানের আলো দেখাতে পারলেন না। চলতি বছরের বিশ্বকাপে প্রথম বার ১০ উইকেট হারাল ভারত।

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
September 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930