নিউজ ডেস্কঃ ভাবতে পারছেন? এক কেজি চালের দাম কুড়ি হাজার টাকা!! বিশ্বাস হচ্ছে না তো? কিন্তু সত্যি এই জাপানী চালের ব্রান্ড কিনমেমাইয়ের প্রতি কেজির মূল্য কুড়ি হাজার টাকা। ২০১৬ সালে জাপানী এই চাল প্রথম আলোচনায় আসে। ওই সময় সারা বিশ্ব থেকে ছ’হাজার জাতের চাল নিয়ে জাপানে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। সেটি মূলত ভাতের স্বাদ পরখ করে দেখার আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীতা ছিল। সেখানে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে এই চালকে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান চাল হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
কিনমেমাই ধানের উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ওয়াকায়ামাভিত্তিক টয়ো রাইস করপোরেশন। এই চাল মূলত পাঁচটি জাতের সংমিশ্রণ। এর মধ্যে কোশিহিকারি ও পিকামারু জাত অন্যতম। তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি ধরণের স্বাদের ওপর নির্ভর করে এই মিশ্রণটি প্রতিবছর পরিবর্তিত হতে পারে। এই এক কেজি কিনমেমাই চালের টাকা দিয়ে অনেকের পুরো মাসের সংসার চলে। সাধারণত ভালো এবং প্রিমিয়াম মানের চালের কেজি সর্বোচ্চ একশত থেকে দুইশত টাকা হতে পারে।
তবে এই চালের এতো দাম হওয়ার নেপথ্যে অনেক গুনাগুন রয়েছে যা এই চালকে অন্য সাধারণ চাল থেকে আলাদা করে। চালের যেমন দাম তার গুণাবলীও তেমনই হবে। খেতে যেমন অতুলনীয় তেমন পুষ্টিগুণ ও গন্ধে ভরপুর। এমনকি রোগ প্রতিরোধও করে। সেই কারণেই বিশ্বের সবচেয়ে দামী চালের তকমা পেয়েছে। এছাড়া এই চাল হালকা মিষ্টি এবং হজমযোগ্য। প্রচলিত চালের চেয়ে ৭ গুণ ভিটামিন বি১, ১.৮ গুণ ভিটামিন বি৬, ১.৪ গুণ ফোলিক অ্যাসিড, ১.৮ গুণ ফাইবার, ৬ গুণ এলপিএস, ১৪ শতাংশ কম চিনি বা শর্করা ও ১৭ শতাংশ কম ক্যালোরী রয়েছে।

- Sponsored -
আর বেটার ব্রাউনে ত্রিশ শতাংশ কম ক্যালোরী থাকে। তাছাড়াও এই চালে ছ’গুণ বেশী লাইপোপলিস্যাকারাইড থাকায় ফ্লু, ক্যানসার এবং ডিমেনশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। ফলে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের পছন্দের তালিকায় প্রথমেই কিনমেমাই চাল রয়েছে। এই চাল বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্যাকেটজাত করা হয় যাতে করে না ধুয়েই রান্না করা যায়। টয়ো রাইস কর্পোরেশনের গ্লোবাল বিজনেস ডেভেলপমেন্টের প্রধান চিকাকো ইয়ামাওয়াকি, এই চালের সর্বোত্তম স্বাদ পেতে রান্নার আগে ত্রিশ মিনিট ভিজিয়ে রাখার পরামর্শ দেন।
জাপানের একটি সংস্থা একচেটিয়া ভাবেই এই চাল উৎপাদন করে। জানা গিয়েছে, কৃষকদের কাছ থেকে সাধারণ ধানের চেয়ে আট গুণ বেশী দাম দিয়ে এই ধান কেনা হয়। ২০১৬ সালে প্রতি কেজি এই চালের দাম ৯ হাজার ১২৩ টাকা ছিল। এরপর বর্তমানে এই চালের দাম বেড়ে দশ হাজার টাকার ওপরে হয়েছে। কিনমেমাইয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখন এই চাল শুধু জাপান ও সিঙ্গাপুরে পাওয়া যায়।